বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে হোলি উদযাপন নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই বেশ কিছুটা বিতর্ক দানা বেঁধে ছিল। সদ্য সেই বিতর্ক পার করে বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দিয়েছে, ক্যাম্পাসের ‘নন রেসিডেন্শিয়াল স্টুডেন্ট ক্লাব’ বা NRSCর হল-এ হোলি খেলা যাবে। তবে দুটি দিন এই উদযাপনের জন্য বেঁধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর মহম্মদ ওয়াসিম আলি HTকে জানিয়েছেন এই অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি। তিনি বলেন,’ হোলি উদযাপনে আগ্রহী AMU-এর ছাত্রছাত্রীরা ১৩ এবং ১৪ মার্চ NRSC ক্লাবে এই উৎসব উদযাপনের অনুমতি পাবেন। এই ধরনের উদযাপনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্লাবটি খোলা থাকবে।’ উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অখিল কৌশল, ৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরের NRSC ক্লাবে হোলি খেলার জন্য অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। এরপর এই অনুমতি না আসা ঘিরে বিস্তর বিতর্ক হয়। তারপরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত আসে। এই সিদ্ধান্তকে অখিল কৌশল ‘ঐতিহাসিক’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। এর আগে ক্যাম্পাসের ওই হল-এ হোলি খেলার অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হোলি সহ কোনও উৎসব উদযাপনের উপর কোনও বিধিনিষেধ না থাকলেও নতুন কোনও ঐতিহ্য তৈরির জায়গা নেই এখানে। এরপরই সরব হয় স্থানীয় অখিল ভারতীয় কর্নিসেনা। তারা জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়। যাতে শহরের এডিএম ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে হোলি খেলার অনুমতি দেন, তার জন্য তাঁরা আবেদন করেন।
এরই মাঝে আলিগড়ের বিজেপি সাংসদ সতীশ গৌতম সরব হন। তিনি এই বিতর্কের মাঝে বলেন,’ যেকোনও মতে এএমইউতে হোলি উদযাপিত হবে, যে রুখবে তাঁকে উপরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’ বিজেপি সাংসদেক এই বক্তব্যে সরগরম হয় আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে রাজনৈতিক আঙিনা। সতীশ গৌতম বলেন, ‘কোথাও হোলি খেলতে কারোর অনুমতিক দরকার নেই।’ তিনি হুঁশায়িরার সুরে বলেন,’কেউ মারপিট করলে তাঁকে উপরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’ এদিকে, আলিগড়ের স্থানীয় কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক বিবেক বনশল অভিযোগ তোলেন বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। তিনি বলেন,’ আমরা সবসময় AMU তে বন্ধুদের সাথে হোলি উদযাপন করতাম এবং এই বিষয়ে কারও কাছ থেকে কোনও তিক্ততা বা বিরোধিতা আমার মনে পড়ে না। তাহলে বিজেপি কেন উস্কানিমূলক রাজনীতিতে লিপ্ত হচ্ছে এবং শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে?’ বিতর্ক দানা বাঁধতেই আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া সিদ্ধান্ত।