ট্রাম্পকে কেন ৮ লাখ ২০ হাজার ডলার জরিমানা?

Spread the love

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৬ লাখ ২৫ হাজার ইউরো তথা ৮ লাখ ২০ হাজার ডলার জরিমানা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের একটি আদালত। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) লন্ডন হাইকোর্ট থেকে এই রায় দেয়া হয়েছে।মূলত সাবেক এক ব্রিটিশ গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা মামলায় হেরে যাওয়ায় আইনি লড়াইয়ের খরচ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এই জরিমানা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইসিক্স-এর সাবেক কর্মকর্তা ক্রিস্টোফার স্টিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপারে একটি নথি প্রকাশ করেন, যা ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে অর্থাৎ ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার আগে প্রকাশিত হয়।

স্টিল ডোসিয়ার নামে ওই নথিতে দাবি করা হয়, রুশ গুপ্তচর ও গোয়েন্দাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতেই ২০১৬ সালের নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন ট্রাম্প। আরও বলা হয়, ২০১৩ সালে মস্কো সফরে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে সময়ই রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি’র সঙ্গে তার সমঝোতা হয়।

এতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘কমপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য’ ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ‘তৈরি’ করার জন্য একটি প্রকল্পে ‘সমর্থন ও নির্দেশ’ দিয়েছিলেন।

নথিতে যৌন অসদাচরণের অভিযোগও তোলা হয়। যা প্রকাশ হওয়ার পরপরই মার্কিন রাজনীতিতে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। স্টিলের নথির প্রশংসা করে তৎকালে বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি। তবে এসব নথিতে দাবি করা তথ্য নাকচ করে দেন ট্রাম্প।

এরপরও কয়েকটি অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করেন মার্কিন বিশেষ প্রসিকিউটর রবার্ট মুলার। ২০১৯ সালে মুলার এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে রুশ সরকার ২০১৬ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল। কিন্তু ট্রাম্পের দলের সাথে যোগসাজশের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এরপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেয়ার কয়েক মাস পর ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের তথ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় ক্রিস্টোফার স্টিলের মালিকানাধীন কোম্পানি অরবিস বিজনেস ইন্টেলিজেন্সের বিরুদ্ধে মামলা করেন ট্রাম্প।

মামলায় ট্রাম্প অরবিস তার ব্যক্তিগত তথ্য অবৈধভাবে প্রক্রিয়াজাত করেছে এবং ‘গুরুতর দুর্ভোগ এবং সুনামের ক্ষতি করার’ জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

তবে কোম্পানি জানায়, স্টিলের প্রকাশ করা ওই নথির সঙ্গে কোম্পানির কোনো সম্পর্ক নেই। মামলার পর লন্ডন হাইকোর্টের বিচারক ক্যারেন স্টেইন এ ব্যাপারে বলেন, দাবিটি বিচারের জন্য এগিয়ে যাওয়ার জন্য ‘কোনো জোরালো কারণ’ নেই।

২০২৩ সালে এই বিচার শুরু হয়। গত বছর (২০২৪) ফেব্রুয়ারিতে এই বিচারক তার এক পর্যবেক্ষণে বলেন, মামলাটি ‘ব্যর্থ হতে চলেছে’।

অবশেষে বৃহস্পতিবার সেই মামলার চূড়ান্ত রায় দেয়া হয়। এতে পরাজিত হয়েছেন ট্রাম্প। ফলে এই মামলায় আইনি লড়াইয়ে যে খচর হয়েছে তা জরিমানা হিসেবে দেয়ার জন্য ট্রাম্পকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *