পাণ্ডবদের রাজধানী ইন্দ্রপ্রস্থ আবিষ্কারের জন্য দিল্লির পুরানো দুর্গে আবারও খনন কাজ চালানো হবে বলে বলে জানা গিয়েছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা এএসআই সেই খননের অনুমোদন দিয়েছে। স্বাধীনতার পর এই নিয়ে এখানে ষষ্ঠবার খননকার্য চালানো হবে ইন্দ্রপ্রস্থের খোঁজে। এবার দুর্গের অভ্যন্তরে বিভিন্ন এলাকায় খনন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এ জন্য অফিসার মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে এই দুর্গে প্রায় ছয় মিটার গভীর পর্যন্ত খনন করা হয়েছিল ইন্দ্রপ্রস্থের খোঁজে।
এএসআই আধিকারিকদের মতে, এবার আরও গভীরে খনন করা হবে। খননের ফলে প্রাচীন ইন্দ্রপ্রস্থ শহর সম্পর্কে তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। পূর্ববর্তী খননকার্যে মৌর্য যুগ, শুঙ্গ, কুষাণ, গুপ্ত, রাজপুত আমল, সুলতানি ও মুঘল আমলের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল। প্রসঙ্গত, দাবি করা হয় যে দিল্লির পুরনো কেল্লাতেই পাণ্ডবদের রাজধানী ইন্দ্রপ্রস্থ ছিল। যদিও এখনও পর্যন্ত এই দাবির পক্ষে কোনও প্রত্নতাত্ত্বিক পোক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় ফের ইন্দ্রপ্রস্থ খোঁজার চেষ্টা করতে চলেছে এএসআই। খননের সময় স্তরে স্তরে বিভিন্ন সময় অংশের প্রমাণ সংগ্রহ করা হবে।
এই নিয়ে এএসআইয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, পুরনো কেল্লায় খননের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই খনন কাজ শুরু করা হবে। এর আগে ১৯৫৪-৫৫ এবং ১৯৬৯-৭৩ সালে এএসআই এখানে খননকার্য চালিয়েছিল। এরপর ২০১৩-১৪ ও ২০১৭-১৮ সালে এখানে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ করা হয়। ২০২৩ সালে পঞ্চমবার এখানে খননকাজ হয়। প্রাক্তন প্রত্নতাত্ত্বিক এবং পদ্মবিভূষণ বিবি লাল এখানে খননকার্যে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে মনে করা হয়। বহু ঐতিহাসিকদের মতে, পুরনো দুর্গটি সম্ভবত একটি ঢিবির উপর অবস্থিত ছিল। সেই ঢিবি নাকি একসময় পাণ্ডবদের রাজধানী ছিল। ১৫৩৩ সালে মুঘল সম্রাট হুমায়ুন প্রথম এই দুর্গের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৫৪০ সালে শের শাহ সুরি দুর্গের নির্মাণকাজ এগিয়ে নেন। ১৫৫৫ সালে হুমায়ুন দুর্গের নির্মাণ কাজ শেষ করেন। এএসআই-এর মিউজিয়াম ডিরেক্টর ডঃ বসন্ত স্বর্ণকর জানিয়েছেন, ‘এর আগে খননকার্যে কুন্তী মন্দিরের জায়গায় বিষ্ণুর ৯০০ বছরের পুরনো রাজপুত যুগের মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল। পাওয়া গেছে গজলক্ষ্মীর ১২০০ বছরের পুরনো মূর্তি, গণেশের মূর্তি ইত্যাদি।’