বন্ধ হয়ে গেল টিটাগড়ের লুমটেক্স জুটমিল‌

Spread the love

নববর্ষের দিন সকালে মানুষ তখন মেতে উঠছেন পুরাতনকে পিছনে ফেলে নতুনকে আলিঙ্গন করতে। পুজো দিতে মানুষজন মন্দিরে ভিড় করেছেন। এমনকী একটা বড় অংশ পরিবার নিয়ে বেড়াতে বেরিয়ে পড়েছেন। আর তখনই চোখে জল নেমে এল চটকল শ্রমিকদের। কারণ বাংলার নতুন বছরের সূচনার দিনই বন্ধ হয়ে গেল টিটাগড়ের লুমটেক্স জুটমিল। আর তাই নববর্ষের দিনই দিশেহারা হয়ে পড়লেন বিপুল পরিমাণ শ্রমিক। কেমন করে সংসার চলবে?‌ এই প্রশ্নই এখন তাঁদের কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।

এদিকে এখানে শ্রমিকদের উপর বাড়তি কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। যা নিয়ে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করেছিলেন। আর এই প্রতিবাদের শাস্তি হিসাবেই রুটি–রুজির উপর কোপ মারা হল। জুটমিলের মালিকের সঙ্গে সামান্য বিরোধের জেরেই বছরের প্রথম দিনেই বেকার হয়ে পড়লেন ১২৫০ জন শ্রমিক। জুটমিল সূত্রে খবর, গতকাল সকালের শিফটে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। তখন স্পিনিং বিভাগে একটির জায়গায় দুটি মেশিন চালানোর জন্য মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নির্দেশ দিয়ে দেয়। তাঁদের উপর বাংলা নববর্ষের শুরুতেই জোর করে কাজের চাপ বাড়ানো হচ্ছে বলে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করেন।

অন্যদিকে সেই প্রতিবাদ এবং আপত্তির কথা জুটমিল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। আর তারপরই জুটমিল বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শ্রমিকদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় শ্রমিকরা বিপদে পড়ে যান। দ্বিগুণ কাজের চাপ বৃদ্ধির প্রতিবাদে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেননি। শ্রমিকদের নানা অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের কোনও দাবি মানা হয়নি। জুটমিলের পরিচালন ব্যবস্থা, প্রাপ্য প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি কোনও কিছুই সঠিক নিয়ম মেনে দেওয়া হয় না। এমনকী প্রভিডেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে গড়িমসি করছে লুমটেক্স জুটমিল কর্তৃপক্ষ।

শ্রমিকদের দাবি মানা না হলে কাজে যোগ না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। সেটারই সুযোগ নিয়ে জুটমিল কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধের নোটিশ টাঙিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। যা নিয়ে আজ, বুধবার সরগরম হয়েছে জুটমিল এলাকা। এই সমস্যা নিয়ে ম্যানেজমেন্টের পক্ষে ওমপ্রকাশ সাউ বলেন, ‘‌আমরা ওঁদের অনুরোধ করেছিলাম। তারপরও শ্রমিকরা কাজে যোগ দেননি। আমি চাই জুটমিল স্বাভাবিক ছন্দে চলুক। কিন্তু একপ্রকার বাধ্য হয়েই জুটমিল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’‌ এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের নেতা তথা স্থানীয় কাউন্সিলর শীষনারায়ণ সিংয়ের বক্তব্য, ‘‌শ্রমিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটা বিরোধ তৈরি হয়েছে। আমি চাই আলোচনার মাধ্যমে সেটা মিটে যাক। মিল বন্ধ কখনই চাইব না।’‌

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *