ভারত বিদ্বেষী হিজবুতের মিছিলে রণক্ষেত্রে ঢাকার পল্টন মোড়

Spread the love

বাংলাদেশের ভারতবিরোধী নিষিদ্ধ গোষ্ঠী হিজব-উত-তাহরির (সংক্ষেপে হিজবুত)-এর ঘোষিত কর্মসূচি ঘিরে শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত থাকল ঢাকার পল্টন মোড় এলাকা। হিজবুত সদস্যদের মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় লাঠি চালাতে হল ঢাকা পুলিশকে। ফাটানো হল কাঁদানে গ্যাসের সেল, ছোড়া হল সাউন্ড গ্রেনেড।

বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে – শুক্রবার (৭ মার্চ, ২০২৫) আগে থেকেই হিজবুতের পক্ষ থেকে ঢাকা শহরে ‘মার্চ ফর খিলাফত’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। যার উদ্দেশ্য হল, বাংলাদেশে ইসলাম অনুসারে শাসনব্যবস্থা কায়েম করা। এই মিছিল ঘিরে যাতে নতুন করে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, তার জন্য আগে থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ প্রশাসন।

এদিন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে এবং আশপাশের এলাকায় আগে থেকেই মোতায়েন ছিল পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ব়্যাব। ঘন ঘন টহলদারি চালাচ্ছিল সেনা। মজুত রাখা হয়েছিল প্রিজন ভ্যান, এমনকী সাঁজোয়া গাড়ি।

কিন্তু, পুলিশ ও সেনার এত আয়োজন সত্ত্বেও ঘোষিত কর্মসূচি থেকে সরে আসেনি হিজবুত। পুলিশের বাধা সত্ত্বেও তারা সংগঠনের ব্যানার নিয়ে মিছিল করে। সেই মিছিল একটা সময় পল্টন মোড় পার করে বিজয় মোড়ের দিকে এগোতে শুরু করে। এরপরই লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারের নমাজ শেষ হতেই এসব শুরু হয়। পুলিশের বাধার মুখে হিজবুত সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান এবং মিছিল ছেড়ে আশপাশের অলি-গলিতে লুকিয়ে পড়েন। তারপরও (শেষ পাওয়া খবর অনুসারে) এদিন দুপুর পর্যন্ত পল্টন মোড় ও সংলগ্ন এলাকায় ঢাকা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে মোতায়েন থাকতে দেখা গিয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হিজবুত একটি নিষিদ্ধ গোষ্ঠী। তাদের কাজকর্ম যেহেতু আমজনতার প্রতি আক্রমণাত্মক ও ক্ষতিকর, সেই কারণেই ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার এই গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

বাংলাদেশের সন্ত্রাসদমন আইন অনুসারে, হিজবুত-সহ এই ধরনের যেকোনও সংগঠন বা গোষ্ঠীর তরফে ঘোষিত বা আয়োজিত সমস্ত ধরনের মিটিং, মিছিল, সমাবেশ প্রভৃতি কর্মসূচিই ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে। এবং যাঁরা সেই অপরাধ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।

উল্লেখ্য, এই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার ভোররাতে (রাত সোয়া বারোটা নাগাদ) ঢাকার উত্তরা থেকে হিজবুতের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা পুলিশের দাবি, ধৃত এই তিনজন শুক্রবারের সাংগঠনিক কর্মসূচির সঙ্গে গোপনভাবে যুক্ত ছিলেন। তাই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, হিজবুত যে সীমান্ত পেরিয়ে এপার বাংলা তথা ভারতেও অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে, তেমন প্রমাণ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। তথ্য বলছে, হাসিনা সরকারের পতনের পর অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে ফের একবার হিজবুত মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। যার ফলশ্রুতি শুক্রবারের এই কর্মসূচি ও অশান্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *