চাওয়া হয়েছিল ২০ দিনের হেফাজত। তবে মুম্বই হামলার চক্রী তাহাউর রানাকে ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজত দেওয়া হয়েছে এনআইএ স্পেশ্যাল কোর্টের নির্দেশে। এর আগে, আমেরিকা থেকে বিশেষ বিমানে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয় তাহাউর রানাকে। দিল্লিতে রানা নামতেই তাকে পাতিয়ালা হাউসকোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়।
সশস্ত্র সোয়াতের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে তাহাউর রানাকে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়। দেখা যায়, মধ্যরাত পার করে সেই প্রিজন ভ্যানই রানাকে নিয়ে দিল্লির রাস্তায় এনআইএ হেডকোয়ার্টারের দিকে ছুটতে থাকে। রানাকে ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিতেই, তাহাউরকে নিয়ে প্রিজন ভ্যান এনআইএ হেডকোয়ার্টারে পৌঁছয়। জানা যাচ্ছে, আপাতত ওই ১৮ দিনে এনআইএর তরফে ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড রানাকে জেরা করা হবে। সেখানে রানার জন্য প্রস্তুত ছিল স্পেশ্যাল সেল। গোটা ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস করার চেষ্টায় চলবে রানার লাগাতার জেরা। জানা যাচ্ছে, সিজিও কম্প্লেক্সে ‘অ্যান্টি টেরর এজেন্সি’র হেড অফিসে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে রাখা হবে রানাকে। জানা যাচ্ছে এনআইএর আইজি, ডেপুটি ইনসপেক্টর সহ পদস্থ একাধিক দাপুটে কর্তারা জেরা করতে চলেছেন রানাকে।
উল্লেখ্য, রানাকে আমেরিকা পাকড়াও করার পর ১৬ বছর পর তাকে ভারতের হাতে তুলে দেয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। রানার প্রত্যর্পণের পরই তাকে বিশেষ বিমানে নিয়ে আসা হয় ভারতে। বৃহস্পতিবার রাতেই দিল্লি পৌঁছয় সেই বিমান। রানার মুখ ক্যামেরার সামনে না আনা হলেও, তার অবয়ব দেখে বোঝা যায় এই কুখ্যাত জঙ্গির বয়সকালে মাথা সাদা হয়েছে। ৬৪ বছর বয়সী রানাকে ভারতে এনেই বিচারের আওতায় আনা হয়। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি (এনআইএ)র বিশেষ জজে কাছে রানাকে ২০ দিনের হেফাজতে রাখার আবেদন জানানো হয় এনআইএর তরফে। তবে তিনি ১৮ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দেন। রানাকে প্রথমেই জজ জিজ্ঞাসা করেন যে, তাঁর কোনও আইনজীবী রয়েছে কি না, রানা জানান তার কাছে তার পক্ষে সওয়াল করার মতো কোনও আইনজীবী নেই। এরপর জজ জানান, দিল্লি লিগাল অথরিটি সার্ভিসের তরফে একজন আইনজীবী তাকে দেওয়া হবে, তার পক্ষে সওয়াল জবাব করার জন্য।
রানার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, খুন, প্রতারণা সহ একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, মুম্বই হামলার চক্রীকে ভারতে আনা হতেই, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। বেশ কিছু মিডিয়া রিপোর্টের দাবি, ২ মাস আগে, মোদীর মার্কিন সফরের সময়ই রানার প্রত্যর্পণ ইস্যুটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় উত্থাপিত হয়েছিল।