‘রিভিউ পিটিশন’ করতে পারেন চাকরিহারাদের একাংশ

Spread the love

প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী ও অশিক্ষক কর্মচারীর চাকরি বাতিল ইস্যুতে একমাত্র যে সম্ভাবনা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই নানা মহলে আলোচনা, জল্পনা চলছিল, শোনা যাচ্ছে – সেই পথেই এগোচ্ছেন চাকরিহারাদের একটা অংশ।

এঁদের সকলেরই দাবি, তাঁরা কোনও দুর্নীতির অংশ নন। তাঁদের দুর্নীতিগ্রস্ত হিসাবে চিহ্নিতও করেনি কোনও পক্ষ। তাহলে কেন তাঁদের উপরেও সেই একই শাস্তির খাঁড়া চালানো হবে, যা সম্ভাব্য দুর্নীতিগ্রস্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে?

সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে, মূলত এই যুক্তি সামনে রেখেই চাকরিহারাদের একটা অংশ এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চের রায় পুনরায় বিবেচনা করে দেখার জন্য ‘রিভিউ পিটিশন’ দাখিল করার পথে হাঁটতে চলেছেন। সেই মতো আইনি গোছগাছও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।

এঁদের একটা বড় অংশের যেমন দাবি, তাঁরা সম্পূর্ণ সৎভাবে সমস্ত সরকারি নিয়ম মেনে চাকরি পেয়েছেন, তেমনই আবার এমনও একটি অংশ রয়েছেন, যাঁরা একটা সময় দুর্নীতির কারণেই বঞ্চিত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে মামলা লড়ে, সেই মামলায় জিতে, তবে হকের চাকরি আদায় করেছেন তাঁরা। আদালতের নির্দেশেই সরকার তাঁদের চাকরি দিতে বাধ্য হয়েছিল। আর এখন সেই আদালতের নির্দেশেই তাঁদের সেই চাকরি চলে গেল!

কিন্তু, আগেও একটা বিষয় সামনে এসেছে। আইনজীবী মহলের প্রায় সকলেই একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন, এই মামলায় চাইলে কেউ ‘রিভিউ পিটিশন’ করতেই পারেন। কিন্তু তাতে লাভ বিশেষ হবে না। কারণ, আদালতের সম্পূর্ণ নির্দেশ পড়ে তাঁদের মনে হয়েছে, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিয়েছে।

তাছাড়া, অতীত বলছে, সুপ্রিম কোর্ট তার নিজের রায়ে পুনর্বিবেচনার আর্জি গ্রহণ করলেও আদতে মূল রায় বদল করে না। ইদানীংকালে এবং অদূর অতীতে এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে, যেখানে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি শেষমেশ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।

এই তালিকায় রয়েছে – নির্বাচনী বন্ডে অনুদান সংক্রান্ত মামলা, ২০২৪ সালের নিট পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত মামলা, বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলা, ঘুষের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া তামিলনাড়ুর মন্ত্রী ভি সেন্থিল বালাজির জামিন খারিজ মামলা, এমনকী বহু চর্চিত আদানি-হিন্ডেনবার্গ মামলাও।

তবে, এত কিছু সত্ত্বেও আইনজীবীদের আর একটা অংশ মনে করছেন, একবার শেষ চেষ্টা করে দেখতে তো ক্ষতি নেই। তাঁদের মতে, ইতিমধ্যেই দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে তাঁদের বেতন ফেরত দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু, বাকিদের চাকরি গেলেও আদালত তাঁদের বেতন ফেরত দিতে বলেনি। এই প্রেক্ষাপটে যদি এসএসসি সহযোগিতা করে, তাহলে যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা সম্ভব হলেও হতে পারে।

আইনজীবী মহলের একটা অংশ বলছেন, এই ব্যাখ্যা, যুক্তি ও তথ্য যদি শীর্ষ আদালতের রিভিউ পিটিশনে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে, তাহলে হয়তো কিছু বদল হলেও হতে পারে। কিন্তু, সেই সম্ভাবনা অত্যন্ত অত্যন্ত ক্ষীণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *