চাকরি বাতিলের ফলে এমনিতেই বহু স্কুলে পঠন-পাঠন থেকে শুরু করে মিড ডে মিল চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ। সেই আবহে এবার মিড ডে মিলে দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগে একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষককে তালাবন্দী রেখে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। ঘটনাটি নদিয়ার কোতোয়ালি থানার আনন্দবাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। অভিযোগ, মিড ডে মিলে দুর্নীতি, নিয়মিত স্কুলে না আসা-সহ একাধিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ওই সহকারী শিক্ষক। শুধু তাই নয়, ওই সহকারী শিক্ষকের কারণেই স্কুলে তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ নেই বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম সুকান্ত সুর। তিনি আগে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন। তবে অভিযোগ ওঠে, ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি মিড ডে মিলের টাকা নয়ছয় করেছেন। এছাড়াও, স্কুলের উন্নয়নের টাকা তছরুপ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকরা।
তাঁদের অভিযোগ, সহকারী শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে আসেন না। এই দাবিতে শুক্রবার সহকারী শিক্ষককে তারা বন্দি রেখে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা। স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন কর্মকার অভিভাবকদের অভিযোগকে মান্যতা দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর সুকান্ত তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। তাছাড়া, সুকান্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকার সময় স্কুলে প্রচুর বিদ্যুতের বিল বকেয়া ছিল। সেই কারণে বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দিয়েছে বিদ্যুৎ পর্ষদ। ফলে তীব্র গরমে ক্লাস করতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। এমনকী এ নিয়ে সহকারী শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইলে তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর ভয় দেখান বলে অভিযোগ।
আরও অভিযোগ, তিনি স্কুলে না এসে কৃষ্ণনগরে একটি ট্রাভেল এজেন্সির কাজ করছেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অভিভাবকরা। জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে অভিভাবকরা ওই শিক্ষককে স্কুলের একটি ঘরে রেখে তালা বন্দি করে আটকে দেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তাঁকে আটকে রাখা হয়। পরে খবর পেয়ে সেখানে কোতোয়ালি থানার পুলিশ পৌঁছে শিক্ষকে উদ্ধার করে। আরও অভিযোগ, তিনি স্কুলের ব্যাঙ্কের বই, চেক বই সব কিছুই নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক সুকান্ত সুর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।