চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের দিন মাঠে জলপান করতে দেখা গিয়েছিল মহম্মদ শামিকে। আর তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল কটাক্ষের মুখে পড়েন ভারতীয় তারকা পেসার। ধর্ম টেনে এনে তাঁকে আক্রমণ শানাতে থাকেন একশ্রেণির লোকজন। তবে সেই বিষয়টা শুধু নেটিজেনদের একটা অংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রইল না, শামিকে আক্রমণ শানালেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের সভাপতি মৌলানা শাহাবুদ্দিন রাজভি বরেইলভিও। তিনি দাবি করলেন, রমজান মাসে রোজা না রেখে শামি যা কাজ করেছেন, তা ইসলামের চোখে অপরাধ। আর সেজন্য আল্লাহের কাছে জবাব দিতে হবে। কারণ রমজান মাসে রোজা রাখাটা বাধ্যতামূলক বলে দাবি করেন মৌলানা।
‘শরিয়তের চোখে শামি একজন অপরাধী’, দাবি মৌলানা শাহাবুদ্দিনের
সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার মৌলানা বলেছেন যে ‘রোজা (রমজান মাসে মুসলিমরা রোজা রাখেন) পালন না করে উনি (মহম্মদ শামি) অপরাধ করেছেন। ওঁনার এরকম কাজ করা উচিত হয়নি। শরিয়তের চোখে উনি একজন অপরাধী। ওঁনাকে আল্লাহের কাছে জবাব দিতে হবে।’
তিনি দাবি করেন, ‘(মুসলিমদের) অন্যতম বাধ্যতামূলক কাজ হল রোজা পালন করা। যদি কোনও সুস্থ-স্বাভাবিক পুরুষ বা মহিলা রোজা না রাখেন, তাহলে তাঁকে বড় অপরাধী বলে বিবেচনা করা হবে। ম্যাচের সময় (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল) ভারতের একজন তারকা ক্রিকেটার মহম্মদ শামি জলপান করেন বা কিছু খান।’
ওই মৌলানা দাবি করেন, শামি যে কাজটা করেছেন, তাতে সমাজের কাছে ভালো বার্তা যায়নি। তাঁর কথায়, ‘(বিশ্বের) মানুষ তাঁকে দেখছিলেন। উনি খেলছেন মানে উনি সুস্থ আছেন। এরকম পরিস্থিতিতেও রোজা রাখেননি শামি। এমনকীও জলপান করেন। যা মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।’
শামির দিকে আঙুল তোলার কোনও অধিকার নেই, পালটা মৌলানা খালিদের
যদিও অল ইন্ডিয়া মুসলিম জামাতের সভাপতির সঙ্গে সহমত পোষণ করেননি একাধিক মৌলবী। এএনআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের এক্সিকিউটিভ সদস্য মৌলানা খালিদ ফারাঙ্গি মাহালি বলেছেন, ‘প্রত্যেক মুসলিমকে বাধ্যতামূলকভাবে রোজা রাখতে হয়। বিশেষত রমজান মাসে সেটা করতে হয়।’
সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তবে কোরানে আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে কেউ যদি কোনও সফরের মধ্যে থাকেন বা অসুস্থ থাকেন, তাহলে রোজা পালন না করার সুযোগ আছে। মহম্মদ শামিও একটা সফরের মধ্যে আছেন। তাই ওঁর রোজা পালন না করার সুযোগ আছে। ওঁনার দিকে কারও আঙুল তোলার কোনও অধিকার নেই।’
ধর্ম নিয়ে কিছু জানেন না শাহাবুদ্দিনরা, তোপ রশিদির
একইসুরে অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাজিদ রশিদি বলেন, ‘যাঁদের ধর্ম নিয়ে কোনও ধারণা নেই, তাঁরা এরকম কথা বলেন। যদি কোনও সমস্যা থাকে, তাহলে ইসলামে কোনও সফরকারীকে রোজা পালন না করার অনুমতি দেওয়া আছে। তাছাড়া কাউকে অপরাধী হিসেবে দাগিয়ে দেওয়ার কোনও অধিকার নেই কারও।’