উত্তর প্রদেশের(Uttarpradesh) মেরঠে এক হাড়হিম করা ঘটনা ঘিরে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় স্বামীকে খুন করে তাঁর দেহ ১৫ খণ্ড করার অভিযোগ রয়েছে স্ত্রী ও তাঁর সঙ্গীর বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়। ওই দেহখণ্ড একটি সিমেন্টের ড্রামে রাখা হয় বলেও অভিযোগ। মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রস্তোগির হত্যাকাণ্ড ঘিরে তদন্তে নামতেই এই হাড়হিম করা ঘটনার তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। ঘটনায় সৌরভের স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক গ্রেফতার হতেই পুলিশের জেরায় বিস্ফোরক তথ্য এসেছে।
সদ্য লন্ডন থেকে মেরঠে এসেছিলেন মার্চেন্ট নেভির কর্মী সৌরভ রস্তোগি। পুলিশ জানিয়েছে, শেষবার সৌরভকে ৪ মার্চ দেখা গিয়েছিল। অভিযোগ, সেই দিনই সৌরভকে খুন করা হয়। সৌরভ খুনে অভিযোগ রয়েছে তাঁর স্ত্রী মুসকান রস্তোগি ও তাঁর সঙ্গীর বিরুদ্ধে। পুলিশের অনুমান, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন।
প্রেম ঘটিত বিয়ে ও পরে…
জানা যায় ২০১৬ সালে সৌরভ রস্তোগির সঙ্গে বিয়ে হয় মুসকানের। বিয়ে ছিল প্রেম ঘটিত। এমনই তথ্য উঠে আসছে। সৌরভ ও মুসকানের ৫ বছরের সন্তান রয়েছে।
জানা যাচ্ছে, স্ত্রীর সঙ্গে বেশি সময় কাটাবেন ভেবে মার্চেন্ট নেভির চাকরি ছেড়ে দেন সৌরভ। সৌরভের হঠাৎ করে চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেয়নি পরিবার। এদিকে, সৌরভ ঠিক করেন, তিনি ভাড়া বাড়িতে থাকবেন। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সদ্য ভাড়া বাড়িতে চলে যান। ২০১৯ সালে মুসকান ও সৌরভের ঘরে আসে সন্তান। তারপরই সৌরভ জানতে পারেন যে মুসকানের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে সাহিল নামে এক যুবকের। দাম্পত্যে আসে বিবাদ। একটা সময় ডিভোর্সের কথাও ভাবে দম্পতি। তবে সন্তানের কথা ভেবে পিছিয়ে আসেন সৌরভ। পরে ২০২৩ সালে তিনি ফের মার্চেন্ট নেভিতে যোগ দেন। দেশ ছেড়ে কাজের সূত্রে অন্যত্র চলে যান তিনি।
জন্মদিন ও হত্যা
সদ্য ২৮ ফেব্রুারি সৌরভ, মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে ভারতে আসেন। ততদিনে মুসকান ও সাহিল আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে বলে জানা যায়। পুলিশের অনুমান, তখনই সৌরভকে খুনের ছক কষা হয়। পুলিশের জেরার মুখে মুসকান জানিয়েছেন, গত ৪ মার্চ সৌরভের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় মুসকান। সৌরভ ঘুমোতেই তাঁকে ছুরি ব্যবহার করে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশি জেরায় উঠে এসেছে। তারা দেহখণ্ড একটি ড্রামে রেখে, তা ভেজা সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দেয়, বলে অভিযোগ। পরিকল্পনা ছিল যে পরে সেই ড্রামকে ফেলে দেওয়া হবে সুযোগ বুঝে।
কীভাবে সামনে এল সত্যি?
জানা গিয়েছে, সৌরভ হত্যার পর তাঁকে দেখতে না পেয়ে পড়শিরা তাঁর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই, মুসকানরা জানায়, সৌরভ পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছে। এদিকে, ঘরের ছেলেকে ফোনে বহুদিন না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয় পরিবার। পুলিশ তদন্তে নামতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।