হাওড়ায় বিজেপি ঘনিষ্ঠ ২ সংগঠনের মিছিলে ধাতুর তৈরি কোনও অস্ত্র নিয়ে হাঁটা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই হাওড়া শহরেই তৃণমূলঘনিষ্ঠ সংগঠনের রামনবমীর মিছিলে দেখা গেল অস্ত্র। রবিবার হাওড়ার খটিক সমাজের রামনবমীর মিছিলে তলোয়ার হাতে হাঁটতে দেখা যায় এক ব্যক্তিকে। মিছিলে অংশগ্রহণ করেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম চৌধুরীও। তাঁর সাফাই, এটা ৮০ বছরের ঐতিহ্য।
রামনবমীতে অস্ত্র মিছিলের বিরোধিতায় বারবার সরব হয়েছে তৃণমূল। এবার সেই তৃণমূলের বিধায়কই হাঁটলেন অস্ত্রমিছিলে। রবিবার উত্তর হাওড়ায় খটিক সমাজের রামনবমীর মিছিলের সামনে দেখা যায় অস্ত্র। সেই মিছিলে হাঁটেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম চৌধুরীও। প্রশ্ন উঠছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে কি না এব্যাপারে বিজেপিঘনিষ্ঠ সংগঠনের ওপর পুলিশ চিলের মতো নজর রাখলেও তৃণমূলঘনিষ্ঠ সংগঠনকে ছাড় কেন?
খটিক সমাজের রামনবমীর শোভাযাত্রার অন্যতম উদ্যোক্তা বিবেক সোনকার বলেন, ‘আমি আমাদের ঐতিহ্যবাহী রাম উপাসকদের কৃতজ্ঞতা জানাই, যাঁরা ১৯৪৫ সাল থেকে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। আজ শক্তি পূজার দিন। বিগত ক’দিন ধরে নানা রকম প্রতিবাদ হলেও আমরা সার্বদুর্গা পূজার এই উৎসবকে সার্থকভাবে সম্পন্ন করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ আপনারা দেখেছেন, মুসলিম ভাইয়েরা হাতজোড় করে হাঁটছেন, আমাদের জন্য ঠান্ডা জল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এটা এক অসাধারণ সম্প্রীতির ছবি। যারা এই ঐতিহ্য বোঝে না, তারা নিজের ধর্মকেই অপমান করছে। ঈশ্বর তাদের সঠিক জ্ঞান দিন।’
উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী বলেন, ‘এই শোভাযাত্রা বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। এখানে কেবলমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্রই ব্যবহার হয়। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই এই আয়োজন হয়। আমি বহুবার এই যাত্রায় অংশ নিয়েছি। এটা আমাদের সমাজের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ঐতিহ্য।’
রামনবমীর সকালে হাওড়ার কদমতলা থেকে রামরাজাতলা রামমন্দির পর্যন্ত মিছিল থেকে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, ‘ধর্মকে রক্ষা করতে হলে অস্ত্র হাতে তুলতেই হয়। আমরা হিন্দুরা শান্তিপ্রিয়, কিন্তু বারবার যদি আঘাত আসে, ধর্মের অপমান করা হয়, তখন আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র তো তুলতেই হবে।’ তিনি তৃণমূলকে নিশানা করে আরও বলেন, ‘ইদের দিন হিন্দু ধর্মকে ‘গন্দা ধর্ম’ বলা হয়েছিল। হিন্দুত্ব নিয়ে তাঁদের কিছু বলা সাজে না।’