‘প্রতিযোগিতামূলক’ দুনিয়ায় ছেলেদের ভবিষ্যৎ ‘অন্ধকার’। সেই আশঙ্কায় দুই খুদে সন্তানকে হত্যা করে নিজেও আত্মঘাতী হলেন বাবা। এমনই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। বাড়ির শৌচাগার থেকে ওই দুই শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া জেলার। ওই ব্যক্তি ওয়ানাপল্লি চন্দ্রকিশোর সুব্বারাও নগরের বাসিন্দা। তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট ছিলেন। তাঁর দুই পুত্রের একজন প্রথম শ্রেণিতে এবং অন্যজন ইউকেজিতে পড়ত। তাদের বয়স যথাক্রমে ছয় এবং সাত বছর।
একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ছেলেদের পড়াশোনা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় থাকতেন বাবা। সম্প্রতি দুই ছেলেরই স্কুলও বদল করেন তিনি। অভিযোগ, তাদের হাত-পা বেঁধে বালতির জলে ডুবিয়ে খুন করেছেন বাবা। তারপর ঘরে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন। একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে ছেলেদের স্কুলের খারাপ ফলের কারণে হতাশার কথা লেখা ছিল। ইতিমধ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার হোলি উপলক্ষে চন্দ্রকিশোরের অফিসে একটি অনুষ্ঠান ছিল। স্ত্রী, সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময়ে স্ত্রীকে অফিসেই আরও কিছুক্ষণ থেকে যেতে বলেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি দর্জির দোকানে যাবেন। ফিরে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি যাবেন। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ফিরবেন, আশ্বাস দিয়েছিলেন যুবক। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পরেও তিনি না ফেরায় তখনই তাঁর স্ত্রী তনুজা তাঁকে ফোন করেন। কিন্তু, কোনও উত্তর পাননি। এরপরেই তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে বাড়িতে যান যুবকের স্ত্রী। সেখানে তিনজনের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
স্থানীয় থানার ইনস্পেক্টর বি পেড্ডিরাজু জানান, সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন দম্পতি। কিছুদিন আগে ভালো ফলের আশায় স্কুলও বদলেছিলেন। বাবার চিন্তা ছিল, বাইরের জগতের নিরন্তর প্রতিযোগিতার সঙ্গে তাঁর ছেলেরা মানিয়ে নিতে পারবে না। দম্পতির কোনও আর্থিক সমস্যা ছিল না বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। যেখানে চন্দ্রকিশোর লেখেন, ‘প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় ছেলেরা পেরে উঠছে না। ওদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত আমি।’ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।