বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় একটি ছবি। যা ধর্মতলার অনশন মঞ্চে। যেখানে দেখা যায় ডাক্তার স্নিগ্ধা হাজরার হাতের পালস চেক করছেন ডাক্তার দেবাশিস হালদার। এই ছবিতে হয়তো আলাদা করে কোথাও ভালোবাসার কথা লেখা নেই, তবে দুজনের চোখমুখের অভিব্যক্তি বুঝিয়ে দেয়, কীভাবে মায়ার বাঁধনে ওরা বেঁধে রেখেছে একে-অপরকে। আসফাকুল্লা নাইয়া, কিঞ্জল নন্দ, আরও অনেক ডাক্তার সহযোদ্ধা তাঁদের ভালোবাসার এই সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করে নিয়েছেন সোশ্যালে।
ষষ্ঠীর দিন, জুনিয়র ডাক্তার আর সরকারের আলোচনা একপ্রকার ব্যর্থ হওয়ার পর মিডিয়ার সামনে প্রায় কেঁদে ফেলেছিলেন দেবাশিস। সহযোদ্ধারা অনশনেদিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কে পারে চোখের জল ধরে রাখতে। স্ত্রী দিনদিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে জেনেও, অনশন ভাঙা হবে না হুংকার দিতে সত্যিই লাগে শিরদাঁড়ার জোর! মাথা উঁচু করে বাঁচার পাশাপাশি, বিপ্লব-ভালোবাসা হাত ধরাধরি করে চালিয়ে যেতে পারার শিক্ষাও দিয়ে গেল এই তরুণ তুর্কিরা।
হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন, স্নিগ্ধা আর দেবাশিষ স্বামী-স্ত্রী। মাসছয়েক আগেই তাঁরা বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর এটাই প্রথম পুজো। তবে আরজি কর নির্যাতিতার বিচার চেয়ে এবারে সেটা ধর্মতলায় রাস্তার ধারেই কাটিয়ে ফেললেন স্নিগ্ধা-দেবাশিষ।
তাঁদের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যা খুব সম্ভবত রিসেপশনের। সবুজ রঙের বেনারসি স্নিগ্ধার। সেজেছেন সোনার গয়নাতে। আর দেবাশিষের গায়ে সবুজ রঙেরই পাঞ্জাবি। বর-বউ ম্যাচিং করে সেজেছিলেন এদিন, যেমন আর পাঁচটা সাধারণ বর-কনে করে। শুধু তাঁদের আসাধারণ করে দিল, আন্দোলনের এই তীব্র মানসিকতা। যেখানে নিজের জীবনকেও বাজি রাখতে রাজি!
বৃহস্পতিবার স্নিগ্ধা-দেবাশিষকে নিয়ে ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়া লিখেছিলেন, ‘আমি অনেক প্রেম দেখেছি। আমি অনেক বিশ্বাস দেখেছি। আমি অনেক প্রতিবাদ দেখেছি। কিন্তু প্রেম বিশ্বাস, প্রতিবাদ সবগুলির মেলবন্ধন এখানে দেখছি।’ ডাক্তার অভিনেতা কিঞ্জল নন্দের স্ত্রী সেই পোস্ট শেয়ার করে লেখেন, ‘নিজের ভালবাসার মানুষকে প্রতি মুহূর্তে ক্ষয় হতে দেখা, তবু চোখের জল আটকে সজোরে অওয়াজ তোলা ‘অনশন ভাঙা হবে না যতক্ষণ না সব দাবি মানা হচ্ছে’… সাংঘাতিক মনবল ও প্রবল নিষ্ঠার পরিচয়… কুর্নিশ’।