আবার আইআইটি খড়্গপুরে এক পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু সামনে এল। রবিবার মাঝরাতে ওই ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ এই মৃতদেহ উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করেছে। মহারাষ্ট্রের ছেলেটি খড়গপুরে পড়তে এসেছিল। মেধাবী এই ছাত্র খুব কম কথা বলতেন। তবে সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন। সেখানে কেমন করে এই ঘটনা ঘটল? তা নিয়ে আজ, সোমবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ ছাত্রের দেহটি উদ্ধার করে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের পরে দেহ হস্তান্তর করা হবে। এই মৃত্যু নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মামলা দায়ের হয়নি।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রের নাম অনিকেত ওয়ালকার (২২)। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। উচ্চশিক্ষার সূত্রে বাংলা এসেছিলেন ওই ছাত্র। আইআইটি খড়গপুরে ওসিয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড নভেল আর্কিটেকচার বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন অনিকেত। সুতরাং চলতি বছরেই এখান থেকে উত্তীর্ণ হয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল অনিকেতের। কিন্তু আর ফেরা হল না। বাড়ি মহারাষ্ট্রের গোন্ডিয়ার সম্রাট অশোকনগর এলাকায়। খড়গপুর আইআইটি’র জগদীশচন্দ্র বসু হস্টেলে থাকতেন অনিকেত। রবিবার নৈশভোজের জন্য তাঁকে ডাকতে গেলে বন্ধুরা কোনও সাড়াশব্দ পাননি। তখন তাঁরা হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীদের খবর দেন। তাঁরাও দরজা খুলতে না পেরে খবর দেন থানায়। পুলিশ হস্টেলে পৌঁছে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে অনিকেতের দেহ। যা নিয়ে আজ ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে অনিকেতের এই মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়েছে পরিবারকে। আজ, সোমবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে হবে মৃত ছাত্রের ময়নাতদন্ত। কিন্তু কেন এভাবে মৃত্যু হল পড়ুয়ার? আত্মহত্যা নাকি খুন? নেপথ্যে কি র্যাগিং রয়েছে? অনেক প্রশ্ন এখন পুলিশের সামনে ভিড় করেছে। যার উত্তর জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চলতি বছরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন ঘটনা ঘটল। কয়েকমাস আগেই একইভাবে আইআইটি খড়্গপুরের হস্টেল থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক পড়ুয়ার দেহ। তিনি ছিলেন কলকাতার কসবা এলাকার বাসিন্দা।
এছাড়া পুলিশ এখন অনিকেতের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেছে। প্রণয়ঘটিত বিষয়ও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ওই ছাত্র পড়াশোনা নিয়ে খুব চাপে ছিল। সেখান থেকেই এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু কোন বিষয় নিয়ে চিন্তা? তা জানতে চলছে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে কথাবার্তা। আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ তদন্তকারীরা।