একই পরিবারের তিনজন সদস্যের দেহ উদ্ধার গোঘাটে

Spread the love

একই পরিবারের তিনজন সদস্যের দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। হুগলি জেলার গোঘাটের ব্যাঙ্গাই গ্রাম পঞ্চায়েতের শালঝাড় গ্রামে এখন এই ঘটনাই চর্চিত হচ্ছে। পুলিশ ওই তিনজনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। মৃত্যুর কারণ তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার এই মর্মান্তিক ঘটনায় সকালের গোঘাটের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের উপশালঝাড় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কদিন আগে প্রৌঢ় দম্পতির ছেলে আত্মহত্যা করেছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। তারপর থেকেই গোটা পরিবার ভেঙে পড়েছিলেন। সেই অবসাদ থেকেই মনে করা হচ্ছে আত্মঘাতী হয়েছে গোটা পরিবার।

এদিকে পরিবারের তরতাজা ছেলেকে এই পরিবার হারিয়েছিল ৮ মাস আগে। তারপরেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করে নন্দী পরিবার। ডাক্তারি পড়ুয়া ২১ বছর বয়সের শান্তনু নন্দীকে ঘিরে পরিবারের বহু স্বপ্ন ছিল। যা শান্তনুর চলে যাওয়ায় ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। এটাই মেনে নিতে না পেরে তাঁর বাবা, মা এবং ঠাকুমা আত্মহত্যা করেন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। মা, ছেলে এবং বউমাকে আজ সকালে বাড়ি সংলগ্ন গোয়ালঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান প্রতিবেশীরা। তখনই তাঁরা চিৎকার জুড়ে দেন। তাতে আরও আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এই পরিবারের সদস্য প্রত্যেকেই খুব ভাল ছিলেন বলে এলাকাবাসীর দাবি।

অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত সদস্যরা হলেন অনিমা নন্দী (‌৭৫)‌, কাশীনাথ নন্দী (‌৫৫)‌ এবং মমতা নন্দী (‌৪২)‌। এই পরিবারে আট মাস আগে কাশীনাথ নন্দীর ২১ বছরের ডাক্তারি পড়ুয়া ছেলে শান্তনু নন্দী আত্মহত্যা করেছিলেন। তারপর থেকেই নন্দী পরিবারের সকলেই ভেঙে পড়েছিলেন। কারও সঙ্গে আর সেভাবে কথাবার্তা বলতেন না। পাড়া–পড়শিদের সঙ্গে মেলামেশা করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাঁরা। একেবারে ঘর থেকে খুব প্রয়োজন ছাড়া বের হতেন না তাঁরা। পুত্রশোকেই পরিবারের সকলে একসঙ্গে এমন মর্মান্তিক পথ বেছে নিলেন বলে প্রতিবেশীদের অনুমান। সেটা এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এছাড়া নন্দী পরিবারের এক প্রতিবেশী জানান, আজ সকালে কাউকে বাড়ি থেকে বের হতে না দেখে সন্দেহ হয়। তাঁরা বাড়ির বাইরে থেকে তখন ডাকাডাকি শুরু করেন। কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে দরজা ভেঙে বাড়ির ভিতরে তাঁরা দেখেন, গোয়ালঘরে তিনজনের দেহ ঝুলছে। এই ঘটনা নিয়ে হুগলি গ্রামীণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায় বলেন, ‘প্রতিবেশীদের দাবি অনুযায়ী নন্দী পরিবারের সদস্যরা অবসাদে ভুগছিলেন। অনুমান করা হচ্ছে, আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা। তবে ময়নাতদন্ত হওয়ার পর রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *