বন দফতর এবং বায়ুসেনার উপর আগেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। একটা নোটিশ, যেখানে গুলি করার কথা লেখা রয়েছে সেটা আজ বুধবার ছবি তুলে এনে আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠকে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরই রাজাভাতখাওয়া এলাকায় পর্যটকদের উপর জোরজুলুম করা নিয়ে সোচ্চার হন মুখ্যমন্ত্রী। এটি উত্তরবঙ্গের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র বলে পরিচিত। সারাবছরই এখানে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। অথচ এই রাজাভাতখাওয়ায় প্রবেশ করার জন্য পর্যটকদের কাছ থেকে মাথা পিছু আড়াই হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এই অভিযোগ যায় মুখ্যমন্ত্রীর কানেও। তিনি যে এসব খবর রাখেন সেটা নিজে থেকেই জানিয়ে দেন। আজ, বুধবার আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক সভায় এক কর্তার কাছ থেকে এই কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পর্যটকরা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী হেল্পলাইনে ফোন করে এই অভিযোগ করেছেন। সুতরাং বিষয়টি তিনি জানেন। এরপরই নিজের ক্ষোভ সপ্তমে তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কার অনুমতিতে এসব হচ্ছে?’ বন দফতরের এক কর্তা তখন জানান, ‘এই নিয়মই চলে আসছে’। পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘এটা জমিদারি নাকি? গায়ের জোর দেখানো হচ্ছে?’
রাজাভাতখাওয়ায় বেশ কয়েকজন পর্যটক কলকাতা থেকে এসেছিলেন। তাঁরা বিষয়টি দেখে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ হেল্পলাইনে ফোন করেন। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রী সবটা জানতে পারেন। তাই আজ এই প্রসঙ্গ সামনে আসতেই মুখ্যসচিবের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ‘এটা ইমিডিয়েট চেঞ্জ করো। এত টাকা নিলে কেন পর্যটক আসবে?’ এমনকী এই বিষয়ে ক্যাবিনেট বৈঠক ডেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট নিজেদের ভগবান মনে করে নাকি। এই জিনিস বরদাস্ত করব না।’
উত্তরবঙ্গে এখন পর্যটক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এখানে রাজ্য সরকার হোম স্টে গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছে। অথচ কিছু ক্ষেত্রে বন দফতর বাধা তৈরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেটাও এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর কানে অভিযোগ হিসাবে। এই বিষয়েও যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশ দেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। জঙ্গল এলাকায় বহুতল নির্মাণের অভিযোগও তাঁর কাছে আছে। তাই স্থানীয় পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘চোখ, কান খোলা রেখে কাজ করুন। আপনাদের অনুমতি ছাড়া তো এগুলি হতে পারে না। কাদের গাফিলতিতে এসব হচ্ছে? সেটা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। জেলার সঙ্গে রাজ্যের বন দফতরের সমন্বয়ে ঘাটতি আছে। সমস্যা মেটাতে সপ্তাহে একদিন ভিডিয়ো কনফারেন্স করুন।’