গ্রেগ স্টুয়ার্ট বোঝালেন এখন ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে বেশি ভাবে না মোহনবাগান

Spread the love

শনিবার রাতে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে জোড়া গোলে হারানোর আনন্দে ভেসে গিয়েছেন মোহনবাগান সমর্থকেরা। এই খুশি সবুজ-মেরুনের ফুটবলার থেকে স্প্যানিশ কোচ সকলের মুখেও দেখা গিয়েছে। তবে এই জয়ের পর গ্রেগ স্টুয়ার্ট উচ্ছ্বাসহীন। আসলে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ এখন মোহনবাগান ফুটবলারদের কাছে আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই। টানা ন’টি ডার্বি অপরাজিত সবুজ-মেরুন শিবির। আটটিতেই জয় পেয়েছে তারা। ধারাবাহিক সাফল্যে লাল-হলুদ শিবিরকে আগের মতো আর বাড়তি সমীহ করেন না মোহনবাগান ফুটবলারেরা। সেই কারণেই ঘরের ডার্বি জিতেও গ্রেগ স্টুয়ার্ট উচ্ছ্বাসহীন।

শনিবার আইএসএল-এর চলতি মরশুমের প্রথম ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বিতে ২-০-য় জেতে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ৪১ মিনিটে জেমি ম্যাকলারেন ও ৮৯ মিনিটে দিমিত্রিয়স পেত্রাতস পেনাল্টি থেকে করা গোলে দলকে জেতান। মহমেডান এসসি-কে যে রকম দাপুটে ফুটবল খেলে হারিয়েছিল তারা, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তেমনই আধিপত্য বিস্তার করে জেতে তারা। পরপর দু’টি কলকাতা ডার্বি জিতে আপাতত লিগ টেবিলের দু’নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে গতবারের লিগশিল্ড জয়ীরা।

এই জয়ের পরে আনন্দের মধ্যেও বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলতে চান মোহনবাগান কোচ। ডার্বি জিতলেও নিজের দলের উন্নতি, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং অবশ্যই তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য যে একেবারেই ভুলে যাননি তিনি, সেটাই বুঝিয়ে দেন আইএসএল জয়ী কোচ। এদিকে এই নিয়ে দু’টি ডার্বি খেলে ফেললেন মোহনবাগানের স্কটিশ মিডফিল্ডার গ্রেগ স্টুয়ার্ট। দু’টিতেই জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি।

ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে বার বার জয়ের পরও স্টুয়ার্ট অবশ্য সৌজন্য বজায় রাখলেন। ম্যাচের পর গ্রেগ স্টুয়ার্ট বললেন, ‘এই ম্যাচ সব সময় আলাদা। ডার্বি জেতার অবশ্যই আলাদা আনন্দ রয়েছে। সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরে ভালো লাগছে। সমর্থকেরা সব সময় পাশে থাকেন। ওদের ধন্যবাদ।’ এরপর ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘ইস্টবেঙ্গল যথেষ্ট ভালো দল। ওদের বেশ কয়েক জন ভালো ফুটবলার রয়েছে। দলটা এখন ছন্দে নেই। নতুন কোচ এসেছেন। সব কিছু ঠিক করতে হয়তো একটু সময় লাগবে। আশা করি ওরা দ্রুত চেনা মেজাজে ফিরবে।’

ডার্বি জয়ের পরে নিজেদের প্রস্তুতি নিয়ে গ্রেগ স্টুয়ার্ট আরও বললেন, ‘আমরা আলাদা কোনও প্রস্তুতি নিইনি। বাকি ম্যাচগুলির আগে যেমন প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, এই ম্যাচের আগেও তেমনই প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা সব সময় সেট পিসের উপর বাড়তি গুরুত্ব দিই। এ বারও একই রকম হয়েছে সব কিছু।’

এদিনের ম্যাচের পরে মোহবাগানের কোচ বলেন, ‘আজ আমি খুবই খুশি। আমি একজন কোচ, যে একটা ভালো দলের কয়েকজন ভালো খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা একসঙ্গে অনেক পরিশ্রম করছি। শুরু থেকেই বলে আসছি যে, আমাদের সময় দিতে হবে, সবাইকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। একটা প্রক্রিয়ার জন্য সময় দিতে হয়। এখন মনে হচ্ছে সব কিছুই খুব ভালো হচ্ছে। তবে এখনও আরও উন্নতির জায়গা রয়েছে।’

এদিন ইস্টবেঙ্গলের কোচ বলেন, ‘আমাদের দলে আক্রমণাত্মক মনোভাবের অভাব আছে, তীব্রতার অভাব আছে এবং মাঝেমধ্যে আমরা আক্রমণে ওঠায় ভুল করছি। মোহনবাগান এসজি আমাদের চেয়ে দক্ষতায় ও শারীরিকভাবে আমাদের চেয়ে এগিয়ে। আমাদের দলে প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতীয় দলে খেলে। তীব্রতা বাড়ানোর জন্য আমাদের আরও কাজ করতে হবে, নয়তো প্রতি ম্যাচে আমাদের ৫-৬টি করে গোল করতে হবে, যা অসম্ভব। আমাদের দল পাঁচ ম্যাচে ১১টি গোল হজম করেছে এবং সবার আগে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমি সদ্য এসেছি। পুরো ব্যাপারটা বুঝে নিয়ে সব সামলানোর জন্য আমাকে সময় দিতেই হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *