শূন্যতা কাটাতে সিপিএম তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আসবে নেতৃত্বে বলেছিল। তারপর নানা নির্বাচনে তা করতেও দেখা যায়। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন তরুণ মুখদেরই প্রার্থী করা হয়েছিল। আন্দোলন, কর্মসূচির ক্ষেত্রেও তাঁদের আনা হয়েছে। কিন্তু নেতৃত্বে তা নিয়ে আসতে পারছে না। সুতরাং ভরসা সেই বৃদ্ধতন্ত্রে। আর ফলাফল সেই শূন্য। তাই তো লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের তরুণ প্রার্থীদের জামানত জব্দ হয়েছে বলে আবার পুনর্মুষিক ভব হল। এখন সামনে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে আলিমুদ্দিন। কিন্তু নিয়মভঙ্গ করে আবার নিরঞ্জন শিহিকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক করল সিপিএম। এই নিয়ে চতুর্থবার জেলা সম্পাদক হলেন সত্তুরে বৃদ্ধ নিরঞ্জন শিহি।
এই নিয়ে দলের অনেক কমরেড বেশ ক্ষুব্ধ। কিন্তু তা মুখ ফুটে বলতে পারছেন না। না হলে সরিয়ে দেওয়া হবে। জেলায় এত তরুণ মুখ থাকতে কেন ৭০ উর্দ্ধ নিরঞ্জনকে জেলা সম্পাদক করা হল? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এখন দল শূন্যতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সেখানে সেই বৃদ্ধতন্ত্রের উপর ভরসা রাখল আলিমুদ্দিনের কর্তারা। শূন্যের নীচে তো আর কোনও সংখ্যা নেই। তাই কোনও তরুণ মুখকে জেলা সম্পাদক পদে নিয়ে এলে বাড়তি কোনও ক্ষতি হতো না। বরং লাভ হলেও হতে পারত। রবিবার পাঁশকুড়ায় তিনদিন ধরে চলা জেলা সম্মেলন শেষ হতে সর্বসম্মতিক্রমে নিরঞ্জন শিহিকে জেলা সম্পাদক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সিপিএম সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় লক্ষ্মণ শেঠ জমানার পর তিনবার জেলা সম্পাদক হয়ে রেকর্ড করেছিলেন নিরঞ্জন শিহি। এবার চতুর্থবার হয়ে গেলেন। তাতে শূন্যতা কাটবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষ। পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপি প্রভাব বিস্তার করেছিল। যা অনেকটা নামিয়ে আনতে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে সিপিএম কি এই দুই দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে? উঠছে প্রশ্ন। পাঁশকুড়ার রবীন্দ্র নজরুল মঞ্চে শুরু হয়েছিল সিপিএমের ২৫তম জেলা সম্মেলন। এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ত্রিদিব ভট্টাচার্য। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, অনাদি সাহু, ইব্রাহিম আলি, হিমাংশু দাস–সহ অন্যান্য নেতারাও।
গতকাল রবিবার পুরনো জেলা কমিটি ভেঙে ৬০ জনের নতুন জেলা কমিটি গঠন করা হয়। আর এই জেলা কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে আবার জেলা সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন নিরঞ্জন শিহি। তবে নিরঞ্জন শিহির বিরুদ্ধ গোষ্ঠী এখন আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ তাঁরা এই জেলায় তাঁকে মেনে নিতে নারাজ বলে সূত্রের খবর। আর নিরঞ্জন শিহি আবার জেলা সম্পাদক পদে বসা নিয়ে বলেন, ‘গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী সাধারণত চারবার কেউ জেলা সম্পাদক হয় না। তবে ৭৫ ভাগ যদি সমর্থন মেলে তাহলে চতুর্থবারের জন্য সম্পাদক হওয়া যায়। আমি তো ১০০ ভাগই সমর্থন পেয়েছি। তাই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন নেতৃত্ব।’