ইটের বদলে পাটকেল! বুধবার গভীর রাতে ভারত-সহ একাধিক দেশের উপর পাল্টা শুল্ক বোমা ছুড়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিনের উপর ৩৪ শতাংশ কর চাপানোর ঘোষণা করেন তিনি। যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিল বেজিং। তার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আগুনে ঘি ঢেলে মার্কিন পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে শি জিনপিং প্রশাসন। একই সঙ্গে স্পষ্ট ভাষায় চিন জানিয়ে দিয়েছে, এটা মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্ক বৃদ্ধির পাল্টা পদক্ষেপ। আর তারপরই হুংকার দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন যে চিন প্যানিক করে ভুল করল।
ভারতীয় সময় বুধবার মধ্যরাতে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেন থেকে পাল্টা শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানেই চিনের উপর ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্কের ঘোষণা করেন তিনি। এর মাস দুয়েক আগে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়া পরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা চিনা পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। সবমিলিয়ে চিন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া পণ্যে মোট ৫৪ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এরপরেই বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক বলে, অবিলম্বে এই শুল্ক বাতিল করতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। না হলে বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিপন্ন হবে। এইভাবে বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জয়ী হতে পারে না। এর মূল্য চোকাতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে।
শুক্রবার আরও এক দম এগিয়ে আমদানি করা সমস্ত মার্কিন পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চিন। শুধু তাই নয়, ১৬টি মার্কিন সংস্থাকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের উপর রফতানি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে বেজিং। তার প্রভাব পড়বে মার্কিন অর্থনীতিতেও।

শুল্ক চাপানোর পাশাপাশি বেশ কিছু বিরল খনিজ রফতানিতে রাশ টানার কথা জানিয়েছে চিন। সেই তালিকায় রয়েছে সামারিয়াম, গ্যাডোলিয়াম, টারবিয়াম, ডিসপ্রোসিয়াম, লুটেটিয়াম, স্ক্যানডিয়াম এবং ইট্রিয়ামের। এই সমস্ত অতি বিরল খনিজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করবে না বেজিং। এপ্রিল থেকেই এই সব খনিজ রফতানি বন্ধ করবে তারা।
চিনের স্টেট কাউন্সিল ট্যারিফ কমিশন জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু পদক্ষেপ করেছে যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়মের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। শুধু তাই নয়, এতে চিনের বৈধ অধিকার এবং স্বার্থকে গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাই বার্তা দিতেই এ হেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চিনা বাণিজ্য মন্ত্রক বলেছে, মার্কিন নীতির বিরুদ্ধে ডব্লুটিও-তে একটি বোঝাপড়া চায় তারা। সে কারণে মামলা করা হয়েছে। এছাড়াও সরকার রফতানিতে নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করছে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে। জাতীয় সুরক্ষা এবং স্বার্থ বজায় রাখতে চিনের আইনে এই বিধি রয়েছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে চিন এই নীতি নিয়েছে।