তেলাপিয়া মাছ নির্মূলে উঠে পড়ে লেগেছে থাইল্যান্ড। মাছটির ছড়িয়ে পড়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া থাইল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭টি প্রদেশ। এখন অনেকেই পানিতে নেমে মাছটি ধরার চেষ্টা করছেন। এছাড়া এর জেনেটিক পরিবর্তনের মাধ্যমেও নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কীভাবে তেলাপিয়া এমন দ্রুত ছড়াচ্ছে তা জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট। ব্যাংককের এমপি নাত্তাচা বুনচাইনসাওয়াত বলেছেন, ‘আমরা একটি বিধ্বস্ত ইকোসিস্টেম পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যাব না।’
এর আগেও ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়ার প্রাদুর্ভাবের সম্মুখীন হয়েছে থাইল্যান্ড। তবে এবারের প্রাদুর্ভাব এর আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। নাত্তাচা জানান, এবার ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়ার কারণে থাইল্যান্ড ১০ বিলিয়ন বাথের ক্ষতির মুখে পড়বে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূল সমস্যা হলো ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়া অন্য ছোট মাছ, চিংড়ি এবং শামুকের লার্ভা শিকার করে। এগুলো থাইল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ জলজ সম্পদ।
ব্ল্যাকচিন তেলাপিয়ার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কয়েক মাস ধরে থাই সরকার মানুষকে এ মাছ ধরতে উৎসাহিত করছে। এই মাছ মিঠা পানিতে বেড়ে উঠলেও স্বচ্ছ ও নোনা পানিতেও বেঁচে থাকতে পারে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে এক কেজি তেলাপিয়া ধরতে পারলে ১৫ বাথ দেয় থাইল্যান্ড সরকার। তবে, থাই সরকার এমন একটি মাছের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে যার প্রজনন দ্রুত ঘটে। একটি মা তেলাপিয়া একবারে ৫০০টির বেশি মাছের জন্ম দিতে সক্ষম।
জানা গেছে, ১৪ বছর আগে চারোয়েন পোকফান্ড ফুড নামের একটি কোম্পানি থাইল্যান্ডে পরীক্ষামূলকভাবে ২ হাজার তেলাপিয়া মাছ ঘানা থেকে এনেছিল। যদিও পরে কোম্পানিটি জানায়, সব মাছ তারা মেরে মাটি চাপা দিয়েছে।
দেশটির ওয়ালাইলাক ইউনিভার্সিটির জলজ প্রাণীর জেনেটিক্স বিশেষজ্ঞ ড. সুইট উথিসুথিমেথাভি বলেছেন, ‘আমি এটি নির্মূল করার সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ আমরা এর পরিসর সীমিত করতে পারব না। যখন এটি প্রকৃতিতে থাকে তখন দ্রুত প্রজনন ঘটায়।’