তারকাখচিত মঞ্চ। মুকেশ আম্বানি থেকে শুরু করে সজ্জন জিন্দাল—কে নেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে। বাংলার জন্য বিনিয়োগ–লগ্নি টানতে মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী। কারণ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে এই বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জবাব দিলেন বিরোধীদেরও। তবে ভোলেননি শিল্পপতিদের কোন কথাটি বলতে হবে। যেটা তাঁরা চান। শিল্প করার জন্য জমি এবং পরিবেশ। সেটা যে আছে, সে কথা নিজে মুখেই শিল্পপতিদের সামনে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে বাংলায় কারা আসছেন? কী নিয়ে আসছেন? কত বিনিয়োগ আসছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে অনেকেই। শিল্পপতিরাও জানতে চান বিনিয়োগ করলে কাজের পরিবেশ মিলবে কিনা। এই সব প্রশ্নের একবারে উত্তর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ এই শিল্প সম্মেলন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ধর্মঘট হয় না বাংলায়। এখানে ফিরেছে কর্মসংস্কৃতি। নারীর ক্ষমতায়নে শীর্ষে বাংলা। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পেও এক নম্বরে। পথ দেখাচ্ছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, শিক্ষাশ্রী। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, কী হবে এই সম্মেলন করে? কিন্তু আমাদের দেখাদেখি অন্য সব রাজ্যও এমন ধরনের সম্মেলন করছেন। আর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এই সম্মেলন জরুরি।’
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী যখন একের পর এক জবাব দিচ্ছেন, বার্তা তুলে ধরছেন শিল্পপতি, উদ্যোগপতিদের সামনে তখন মন্ত্রমুগ্ধের মতো তা শুনছেন সকলে। যার পরই বাংলার প্রাপ্তি যোগ হল। বাংলায় দ্বিগুণ বিনিয়োগের ঘোষণা করলেন মুকেশ আম্বানি। জোর দিলেন মোবাইল নেটওয়ার্ক, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ক্ষেত্রে। এই বাংলায় তৈরি হবে এআই ডেটা সেন্টার। জামদানি, মুর্শিদাবাদ, বিষ্ণুপুরী সিল্ককে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন মুকেশ আম্বানির। কালীঘাট মন্দিরের সংস্কারে আর্থিক সাহায্যের কথাও বলেছেন তিনি। আর মুখ্যমন্ত্রীকে সাক্ষী রেখে মুকেশ আম্বানি বলেন, ‘বিশ্বের কোনও শক্তি বাংলার পুনরুত্থান আটকাতে পারবে না।’
এছাড়া জিন্দল গ্রুপের সিএমডি সজ্জন জিন্দাল জানালেন, বাংলার মতো শিল্পবান্ধব পরিবেশ অন্য রাজ্যে পাওয়া যায় না। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা করলেন তিনি। আর প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের কাজ নিয়ে শিল্পপতিদের আহ্বান করে বললেন, ‘সরকার খুব সাহায্য করে। আপনারা নিশ্চিন্তে এখানে বিনিয়োগ করুন।’ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানালেন। আর বাংলা–ঝাড়খণ্ডের ভূপ্রকৃতিগত মিলের কথা উল্লেখ করে তাঁর বক্তব্য, ‘ঝাড়খণ্ডে প্রচুর খনিজ সম্পদ আছে।’ পরিবেশবান্ধব শক্তি–সহ একাধিক বিষয়ে বাংলার সঙ্গে যৌথভাবে শিল্পবিকাশে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করল ভুটান। বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে ঘোষণাও করেন ভুটানের মন্ত্রী।