কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ছাত্রী রঞ্জনি শ্রীনিবাসনের ভিসা সম্প্রতি বাতিল করে দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন। এই আবহে ট্রাম্পের সরকার তাঁকে ডিপোর্ট করার আগেই নিজেই আমেরিকা ছেড়েছিলেন রঞ্জনি। জানা যায়, তিনি নিজের পোষ্য বিড়ালটিকে ছেড়ে দিয়েই আমেরিকা ত্যাগ করেছিলেন। শেষ মুহূর্তে তিনি ফ্লাইট বুক করেছিলেন। নিজের বিড়ালটি একটি বন্ধুকে নিয়ে এসেছিলেন তিনি।
নিউ ইয়র্ক টাইমসকে রঞ্জনি বলেন, আমেরিকায় পরিবেশ খুব অস্থিতিশীল এবং বিপজ্জনক বলে মনে হচ্ছিল। রঞ্জনি শ্রীনিবাসন তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট এবং জিনিসপত্র ছেড়ে দিয়ে নিরাপত্তার সন্ধানে কানাডায় উড়ে যান। এর আগে নাকি লাগাতার এক সপ্তাহ ধরে ফেডারেল এজেন্টরা তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে এসেছিলেন।
উল্লেখ্য, শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্যালেস্তিনীয় সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে সমর্থন করেন এবং সেই সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। মার্কিন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই নিয়ে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ৫ মার্চ স্টেট ডিপার্টমেন্ট শ্রীনিবাসনের ভিসা বাতিল করে। ১১ মার্চ সিবিপি হোম অ্যাপ ব্যবহার করে তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাসনে গিয়েছেন। সেই ভিডিয়ো ফুটেজ পেয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ। এদিকে শ্রীনিবাসন যে সহিংসতার পক্ষে সওয়াল করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ তাদের কাছে আছে কি না, তা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জানাননি মার্কিন কর্মকর্তারা।
রঞ্জনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে নগর পরিকল্পনায় এমফিল সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া তিনি স্কুল অফ আর্কিটেকচারের স্নাতক। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি সিইপিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অফ ডিজাইন কোর্সও করেছেন। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় ওয়াগনর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুসারে, তিনি ভারতের প্রাক-নগরায়নের শহরগুলি নিয়ে অধ্যয়ন করছিলেন। শ্রমিকদের রাজনৈতিক অর্থনীতির ওপর তাঁর বিশেষ নজর ছিল। এছাড়া বর্তমান সময়ের কর্মসংস্থানের অভাবের দিকেও নজর দিচ্ছিলেন তিনি।
এই বিতর্কের মাঝে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বলেছিলেন, ‘আমেরিকায় বসবাস ও পড়াশোনার ভিসা পাওয়াটা সৌভাগ্যের বিষয়। আপনি যখন সহিংসতা এবং সন্ত্রাসবাদের পক্ষে কথা বলেন তখন সেই বিশেষাধিকার প্রত্যাহার করা উচিত এবং আপনার এই দেশে থাকা উচিত নয়। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী, যিনি সন্ত্রাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন, তিনি সিবিপি হোম অ্যাপ ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত হয়েছেন দেখে আমি আনন্দিত।’