পনেরো দিন ধরে ব্যাঙ্গালোরে প্রেমিকের কাছে চলে গেছিলেন কৃষ্ণনগরের তরুণী।প্রেমিকের কাছে যে যাচ্ছে তা ভুলেও পরিবারকে জানায়নি তরুণী,এমনটাই খবর। যার কারণে তরুণীর নামে মিসিং ডায়েরি করেছিলেন ছাত্রীর পরিবার। তবে ওই তরুণীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে প্রেমিক যে জড়িত তার অভিযোগ করছে ছাত্রীর পরিবার। ভালোবাসা এমন হলে সত্যিই ধিক্কার। প্রতিনিয়ত এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে বাংলায়। যাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতেন, সেই কি আসল খুনি? বারংবার প্রেমিক অস্বীকার করলেও প্রেমিকের মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন কিন্তু সেটাই বলছে।
কৃষ্ণনগরে ছাত্রী খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর প্রেমিক। আটক করা হয়েছিল তাঁর মা-বাবাকেও। জানা যাচ্ছে, প্রেমিকের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন ওই তরুণী। তারপর থেকেই টাকা ফেরত চাইছিলেন প্রেমিক।সেখান থেকে উভয়ের মধ্যে বিবাদ কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে এও জানা গিয়েছে, ওই যুবক কৃষ্ণনগর থেকে ব্যাঙ্গালোর চলে যান। এর কয়েকদিন পর তরুণী নিজের বাড়িতে কিছু না জানিয়ে চলে যায় প্রেমিকের কাছে। পনেরো দিন সেখানেই দিন কাটিয়েছে ওই তরুণী।পুলিশি জেরায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সেই সময় পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন তরুণীর পরিবার। এই নিয়ে কোনও অশান্তি হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাত ১০.১৫ প্রেমিকের টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যায় কলেজ মাঠের আশেপাশে। যা ওই এলাকারই আশেপাশেই রয়েছে বলে খবর। অভিযুক্ত কেন ঘটনার দিন এলাকায় গিয়েছিলেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। জানা যাচ্ছে, পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত প্রেমিক জানিয়েছেন, “আমার সঙ্গে সারাদিন দেখা হয়নি।ফোনে কথা হয়েছিলো। রাতে কলেজ মাঠে আমরা দুজন বন্ধু ছিলাম। আমি ওকে ডেকে পাঠাইনি। ওর সঙ্গে দেখা করার জন্য কলেজ মাঠে গিয়েছিলাম, কিন্তু দেখা হয়নি। ফোন যখন কথা হয়েছে তখন বলছে,আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখিস না।”
যে মহিলা পরিচালিত পুজো মণ্ডপের সামনে দেহটি মিলেছিল সেই খানে তরুণীকে কে বা কারা নিয়ে গিয়েছিলেন সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রেমিক ছাড়া আর কেউ জড়িত কি না ঘটনাস্থলের আশেপাশের বেশকিছু ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি বিয়েও হওয়ার কথা ছিল তাঁদের। মৃতার মা জানান, “সাড়ে সাতটা নাগাদ ছেলেটার সঙ্গে পিৎজা খেতে বেরিয়েছিল। বাড়িতে আমায় জানিয়ে গিয়েছিল। তারপর আর ফোন করেনি। আমি ছেলেটাকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করি। তখন একবার বলছে ও নাকি ঘুমোচ্ছে। একবার আমায় গালিগালাজ করছে। সারারাত আমার বাবা আমার গোটা পরিবার ওকে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু মেয়েকে কোথাও পাইনি। আমি জোর করে ছেলেটাকে থানায় নিয়ে এসেছি।” তিনি আরও বলেন, “প্রথমে সম্পর্ক নিয়ে বিবাদ থাকলেও পরে মিটিয়ে নিয়েছিলাম। ওদের রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা ছিল। পুজোর সময় থেকেই মেয়ে বেরচ্ছিল ওই ছেলেটার সঙ্গে।”
পরিবারের অভিযোগ, প্রেমিক ও তাঁর বন্ধুরা মিলে গণধর্ষণ করে খুন করেছে তাঁদের মেয়েকে। ইতিমধ্যেই থানায় পৌঁছেছেন মৃতের পরিবার। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরিবারের অভিযোগ, গণধর্ষণ করে খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য মুখ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভিডিয়োগ্রাফি ও ফটোগ্রাফি ও এইমস-এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে ময়নাতদন্তের দাবি পরিবারের।