রজত কুমার, যিনি ভারতের তারকা ক্রিকেটার ঋষভ পন্তের জীবন বাঁচিয়েছিলেন, তিনিই এবার নিজের বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষ খেয়ে তাঁরা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তার আগে এই দম্পতির একটি চাঞ্চল্যকর ভিডিয়ো সামনে এসেছে। যা ফের জাতিভেদ প্রথা এবং বর্ণবৈষম্যের মতো কুসংস্কারকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
৯ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরের একটি আখ ক্ষেতে বিষ খাওয়ার আগে একটি ভিডিয়ো রেকর্ড করেছিলেন এই প্রেমিক যুগল। ২৫ বছর বয়সী রজত এবং তাঁর ২১ বছর বয়সী বান্ধবী মনু কাশ্যপ সেই ভিডিয়োতে বলেছেন, ‘যদি আমরা একসঙ্গে বাঁচতে না পারি, আমরা অন্তত একসঙ্গে মারা যেতে পারি।’
৫ বছর ধরে সম্পর্ক রজত এবং তাঁর বান্ধবী মনুর। তবে দু’জনে ভিন্ন বর্ণের ছিল। আর তাঁদের পরিবার জাতিগত পার্থক্যের কারণে এই সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করে অন্যত্র তাঁদের বিয়ের আয়োজন করেছিল। এই প্রত্যাখ্যান তাঁদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় মনু কাশ্যপ মারা যান। মনুর মা আবার অভিযোগ করেছেন যে, রজত কুমার তাঁর মেয়েকে অপহরণ করেছেন এবং তাঁকে বিষ খাইয়েছেন। এদিকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন রজত। তাঁর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে একটি ভয়ঙ্কর গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন পন্ত। তিনি তাতে গুরুতর আহত হন। রুরকির কাছে দেরাদুন হাইওয়েতে পন্তের দুর্ঘটনা ঘটে। সেই সময়ে দুই যুবক দুর্ঘটনার পরে পন্তকে তাঁর জ্বলন্ত গাড়ি থেকে টেনে বের করেছিলেন। এবং তারকা ক্রিকেটারের জীবন রক্ষা করেছিলেন। দুই যুবক হলেন রজত কুমার এবং নিশু কুমার। এখন রজত, যিনি পন্তের জীবন বাঁচিয়েছিলেন, তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করার পরে নিজেই হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।
পন্তকে রক্ষা করার ঘটনার পরেই রজত গোটা দেশে সুখ্যাতি পেয়ে যায়। তিনি শিরোনাম কেড়ে নেন। পন্ত জীবন ফিরে পেয়ে, ফের ক্রিকেটে ফিরেছেন। প্রাণ বাঁচানোর জন্য পন্তের তরফে রজতদের স্কুটিও উপহার হিসাবে দেওয়া হয়েছিল। পন্ত ভাগ্যজোরে সেই ভয়ানক দুর্ঘটনা থেকে শুধু যে প্রাণে বেঁচে যান তাই নয়, প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরে ভারতের হয়ে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিতে নেন। তবে পন্ত প্রাণে বেঁচে গেলেও, তাঁর রক্ষাকর্তার জীবন নিয়ে কিন্তু এখন টানাটানি চলছে। পন্তের ত্রাতাই এবার মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তিনি এই লড়াইয়ে জিতে ফিরতে পারবেন? সেই আশাই করছে গোটা ভারত।