খাস কলকাতার বিজয়গড়ে এক অ্যাপ ক্যাব চালককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল। বুধবার ওই ক্যাব চালককে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আর তার জেরেই ওই ক্যাব চালককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আজ শনিবার সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর। বিজয়গড় এলাকায় এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। লালকার মাঠে পার্কিং নিয়ে বচসার জেরে ওই ক্যাব চালককে প্রচণ্ড মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আর তার জেরেই এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ক্যাব চালকের নাম জয়ন্ত সেন (৩৮)। এক স্কুটার চালকের সঙ্গে তাঁর গাড়ি পার্কিং নিয়ে তুমুল বচসার হয় বুধবার রাতে। তার পরই একদল যুবক জয়ন্ত সেনের বাড়িতে চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই আজ মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় জয়ন্ত সেনের ভাই প্রশান্ত সেন যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ গাড়ি নিয়ে জয়ন্ত তাঁর বিজয়গড়ের বাড়িতে ফেরেন। ওই যুবক একটি ফ্ল্যাটের একতলায় থাকতেন। বাড়ির সামনে গাড়ি রাখার সময় সেখানে রাখা একটি স্কুটিতে ধাক্কা লাগে এবং স্কুটিটি পড়ে যায়।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, অ্য়াপ ক্যাব পার্কিং নিয়ে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে বচসা বাঁধে জয়ন্ত সেনের। লালকা মাঠের কাছে পার্কিংয়ের সময় একটি স্কুটারে ধাক্কা মারে অ্যাপ ক্যাবটি। তখন স্থানীয় যুবকদের মধ্যে জোর ধস্তাধস্তিও হয়। আর তার জেরেই মাটিতে পড়ে যান জয়ন্ত সেন। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে কাছের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েন তিনি। আজ, শনিবার সকালে মৃত্যু হয় ক্যাব চালকের। তবে এলাকাবাসীর দাবি, রাত ১২টার পর ওই মারধরের ঘটনা ঘটে। যাদের স্কুটি ওখানে ছিল তারা ওই ক্যাব চালকের গাড়ির নম্বর অ্যাপের মাধ্যমে স্ক্যান করে দেখে এবং হামলা চালায়।
অন্যদিকে চার বছর আগে বিয়ে হয় জয়ন্ত সেনের। তাঁর এক দেড় বছরের সন্তান রয়েছে। ক্যাব চালকের পরিবারের সদস্যদের দাবি, অভিযুক্ত যুবকরা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। জয়ন্ত সেনের মুখে কাপড় বেঁধে মারধর করা হয়। জয়ন্ত ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হলেও তাঁকে মারধর করা হয়। কলকাতা শহরে এখন একের পর এক গণপিটুনির ঘটনায় আতঙ্ক বাড়ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার সচেতন করা হচ্ছে, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আর এই ঘটনার পর ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বসুন্ধরা গোস্বামী বলেন, ‘পুলিশ বারবার প্রচার করলেও ঘটনা কমেনি। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।’