প্রাথমিকে ‘‌ভুয়ো ইন্টারভিউ’ হয়! লেনদেন ১৫ কোটির সন্দেহ সিবিআইয়ের

Spread the love

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে নয়া মোড়। পিছনের দরজা দিয়ে আসা প্রার্থীদের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেওয়া হয়েছিল। আর ‘ভুয়ো ইন্টারভিউ’ করার ব্যবস্থা হয়েছিল বলে দাবি সিবিআই তদন্তকারীদের। তাঁদের কাছে যে তথ্য উঠে এসেছে তা থেকে তাঁরা দাবি করছেন, শিক্ষা দফতরের অফিসার ও কর্মচারী সংগঠনের নেতাদের আঁতাতে চলেছিল এই ইন্টারভিউ। এই ইন্টারভিউতে আসা প্রার্থীদের নামের তালিকা মামলার পরবর্তী শুনানিতে আদালতে পেশ করা হবে বলে সূত্রের খবর। আর এই ভুয়ো ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও তদন্তকারীরা মনে করছেন।

নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যে তদন্ত চলছিল তাতে নানা সময়ে নানা তথ্য উঠে আসে। মাঝে লোকসভা নির্বাচনের সময় এই তদন্ত থেমে গেলেও এখন তা আবার শুরু হয়েছে। এই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইডি–সিবিআই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। তাতে নেতা–মন্ত্রী থেকে শীর্ষ পদে থাকা অফিসাররাও আছেন। আর তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় জেল হেফাজতে থাকা তাপস মণ্ডল এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন যুব নেতা কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে ‘ভুয়ো ইন্টারভিউ’ করার সূত্র মিলেছিল। তাপস–কুন্তল জেল হেফাজতে থাকা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ।

এখানেই শেষ হচ্ছে না বিষয়টি। সিবিআই(Cbi) সূত্রে খবর, তাপসের বয়ান অনুযায়ী কুন্তল ঘোষ এক হাজারের মতো অযোগ্য প্রার্থীর কাছ থেকে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দু’তিন লক্ষ টাকা করে অগ্রিম নিয়েছিল। কিন্তু চাকরি করিয়ে দিতে পারেনি। বরং শিক্ষা দফতরের একাধিক কর্তা ও কর্মী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে এই ‘ভুয়ো ইন্টারভিউ’ করার ব্যবস্থা করেছিল। ২০১৯ সালে এই ‘ভুয়ো ইন্টারভিউ’ করা হয়েছিল। তাপস যে বয়ান দিয়েছিল তার উপর ভিত্তি করে কুন্তলকে জেরা করা হয়। তখনই শিক্ষা দফতরের কয়েকজন অফিসার ও কর্মচারীর নাম বেরিয়ে আসে। আর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।

সম্প্রতি বিকাশ ভবনে হানা দিয়েছিল সিবিআই। আর তখন একটি ঘর থেকে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রে খবর, ২০২২ সালে ওই ঘরটি সিল করা হয়েছিল। ওই ঘরে নিয়োগের নানা নথি আছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছিলেন একাধিক শিক্ষা দফতরের অফিসার। আর কদিন আগেই প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্য প্রার্থীদের খোঁজ করতে গিয়েই ওই ঘরে থাকা নথি যাচাইয়ের কাজ চলছিল। ওখান থেকেই উঠে আসে প্রাথমিক নিয়োগের ভুয়ো ইন্টারভিউয়ের প্রার্থীদের নামের তালিকা। প্রায় দেড় হাজারের বেশি প্রার্থীর নামের তালিকা উদ্ধার হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *