মুম্বইয়ে সিরিজের পঞ্চম তথা শেষ টি-২০ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৫০ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে ভারত। টিম ইন্ডিয়ার ২৪৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড অল-আউট হয়ে যায় মাত্র ৯৭ রানে। এমন দাপুটে জয়ের সুবাদে ভারত ৫ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ জেতে ৪-১ ব্যবধানে। তবে এখনও ভারতীয় দলের পিছু ছাড়ছে না পুণের কনকাশন-সাব বিতর্ক।
পুণের চতুর্থ টি-২০ ম্য়াচে ভারত হাফ-সেঞ্চুরি করা শিবম দুবের কনকাশন পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামায় হর্ষিত রানাকে। রানা ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন। একজন অল-রাউন্ডারের বদলে কীভাবে একজন বিশেষজ্ঞ পেসারকে কনকাশন পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামায় ভারত, সেই বিষয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়। বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী, কার্যত সকলেরই ধারণা দুবের লাইক-টু-লাইক পরিবর্ত হিসেবে হর্ষিত রানা কোনওভাবেই যথাযথ নন। ভারতীয় স্কোয়াডে থাকে রমনদীপ সিং এক্ষেত্রে দুবের যথাযথ পরিবর্ত হতে পারতেন।
ব্রিটিশ প্রাক্তনীরা শুরু থেকেই এই বিষয়ে গলা চড়াচ্ছেন। কার্যত প্রতারণার অভিযোগ উঠছে ভারতীয় শিবিরের দিকে। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট এক্ষেত্রে ম্য়াচ রেফারি জাভাগল শ্রীনাথের ঘাড়েই দায় চাপায়। ভারতের দাবি, নাম পাঠানোটা তাদের কাজ। ম্যাচ রেফারি অনুমতি দেবেন কিনা, সেটা তাঁর সিদ্ধান্ত। ম্যাচ রেফারির গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই তাঁরা দুবের বদলে হর্ষিতকে মাঠে নামার বলে জানিয়েছেন ভারতের বোলিং কোচ মর্নি মর্কেল।
শুধু ব্রিটিশ প্রাক্তনীরা নন, এই বিষয়ে এবার গলা চড়ালেন টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাসকর। তিনি এই প্রসঙ্গে চূড়ান্ত কটাক্ষ করেন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। সানি এই প্রসঙ্গে ক্রিস ব্রডের সঙ্গে একমত হয়ে এক হাত নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থাকেও।
ক্রিস ব্রড সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তোলেন, আইসিসি আগেকারে দিনগুলির মতো পক্ষপাতিত্বের রাস্তা খুলে রাখতে কীভাবে ঘরোয়া ম্যাচ অফিসিয়াল নিযুক্ত করার অনুমতি দেয়? কেন নিরপেক্ষ ম্যাচ অফিসিয়ালের ব্যবস্থা করা হয় না এখনও?
গাভাসকর তো এক ধাপ এগিয়ে স্পষ্ট দাবি করেন যে, শিবম দুবে আসলে মাঠে নামার মতো অবস্থায় ছিলেন। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে ভারতীয় শিবিরের উপর প্রতারণার অভিযোগ আনেন সানি। টেলিগ্রাফের কলামে গাভাসকর লেখেন, ‘কীভাবে একজন ভারতীয় ম্যাচ রেফারি পার পেতে পারেন ভারতীয় দলের এমন পরিবর্ত অনুমোদন করে। পক্ষপাতিত্ব দূরে রাখতে ম্যাচ অফিসিয়ালদের নিরপেক্ষ দেশের হওয়া দরকার।’
সানি পরক্ষণেই লেখেন, ‘পুণেতে দুবের হেলমেটে বল লাগার পরেও ও শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে। সুতরাং, এক্ষেত্রে কনকাশনের কোনও প্রসঙ্গই ছিল না। তাই কনকাশন পরিবর্তের অনুমতি দেওয়াটাই ঠিক নয়। ব্যাটারদের পেশিতে টান লাগলেও পরিবর্ত খেলোয়াড়ের অনুমতি দেওয়া যায়। তবে সেক্ষেত্রে বদলি ক্রিকেটার শুধু ফিল্ডিং করতে পারে, বোলিং নয়।’
শেষে গাভাসকর যোগ করেন, ‘জোর করে মিল খোঁজা হলেও রানাকে দুবের লাইক-টু-লাইক পরিবর্ত মেনে নেওয়া কঠিন। হ্যাঁ, এখন কেউ যদি বলে যে, ওরা দু’জনেই একই উচ্চতার এবং দু’জনের ফিল্ডিংই একই মানের, তাহলে মেনে নেওয়া যায়। এছাড়া ওদের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ইংল্যান্ডের প্রতারিত হয়েছে মনে করা স্বাভাবিক। ভারতের এই দলটা অসাধারণ। ম্যাচ জিততে এমন কাজ করার কোনও দরকার নেই।’