‘যোগাযোগ এবং বন্ধুত্ব বৃদ্ধি।’ ভারতের আর্থিক সহায়তায় সংস্কারের পর এবার মাহো-অনুরাধাপুরা রেলওয়ে ট্র্যাকের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা দিশানায়েক।এটি ভারত সরকারের সমর্থিত একটি প্রকল্প। রবিবার সকালে শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরায় জয় শ্রী মহা বোধি মন্দিরেও যান প্রধানমন্ত্রী মোদী। সঙ্গে ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা দিশানায়েক।
শ্রীলঙ্কা সফর শেষে রবিবারই ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এক্স বার্তায় প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং বন্ধুত্ব বৃদ্ধি! অনুরাধাপুরায়, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট এবং আমি যৌথভাবে বিদ্যমান মাহো-ওমানথাই রেললাইনের ট্র্যাক আপগ্রেডেশনের উদ্বোধন করেছি। মাহো-অনুরাধাপুরা অংশে একটি উন্নত সিগন্যালিং এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের সঙ্গে জড়িত সিগন্যালিং প্রকল্পটিও চালু করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কাকে তাদের উন্নয়ন যাত্রার বিভিন্ন দিকগুলিতে সমর্থন করতে পেরে ভারত গর্বিত।’
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘মিত্র বিভূষণে’ সম্মানিত করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিশানায়েক। নরেন্দ্র মোদী সে দেশের সরকার এবং শ্রীলঙ্কার জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই সম্মান দুটি দেশের জনগণের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব ও ঐতিহাসিক বন্ধনের পরিচয় দেয়। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখনই শ্রীলঙ্কায় আসি তখনই আনন্দ হয়। শ্রীলঙ্কার জনগণের উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমি অভিভূত।’ ভারত-শ্রীলঙ্কার সাংস্কৃতিক তুলনা টেনে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মানুষের রান্না এবং ক্রিকেটের প্রতি একই রকম আবেগ ও মিল রয়েছে। সেটা হপার হোক বা আপ্পাম, স্ট্রিং হপার হোক বা ইডিয়াপ্পাম—সবকিছুর স্বাদ একই। কয়েক শতাব্দী ধরে আমরা একই মৌসুমি বায়ুর উপর নির্ভর করে এসেছি, একসঙ্গে ব্যবসা করেছি এবং ভাষা ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের মধ্যে মিল খুঁজে পেয়েছি। সম্রাট অশোক তার সন্তানদের শ্রীলঙ্কায় পাঠিয়েছিলেন এবং ভারতীয়রা এখনও এখানে তীর্থ করতে আসেন।’
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, বোধগয়া থেকে অনুরাধাপুর এবং রামেশ্বরম থেকে তিরুকোনেশ্বরম পর্যন্ত, বৌদ্ধ ও রামায়ণের সঙ্গে সম্পর্কিত তীর্থস্থানগুলি আমাদের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে প্রতিফলিত করে।তাই শ্রীলঙ্কার অগ্রগতি ও উন্নয়নের যাত্রায় ভারত সর্বদা একজন বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে থাকবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি গর্বিত যে, আমরা একজন প্রকৃত প্রতিবেশীর মতো শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছি। ২০১৯ সালের সন্ত্রাসী হামলা, কোভিড মহামারী অথবা সাম্প্রতিক আর্থিক সংকট যাই হোক না কেন, আমরা সর্বদা শ্রীলঙ্কার জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এ বারের কলম্বো সফরে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে মোট সাতটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত মউ। আগামী দিনেও শ্রীলঙ্কার উন্নয়নে ভারত পাশে থাকবে বলে অনুরাকে আশ্বস্ত করেছেন মোদী। অনুরাও ভারতকে ‘খুব কাছের’ বন্ধু হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন। মোদীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ ভাবনারও প্রশংসা করেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট।