ঘরের মাঠে হারের হ্যাটট্রিক করে ফেলল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। যে দলটা অ্যাওয়ে ম্যাচে দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতছে, সেই দল চিন্নাস্বামীতে খেলতে নামলেই, মুখ থুবড়ে পড়ছে। এর কারণ বোঝা সত্যিই কঠিন। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ঘরের মাঠে তিন নম্বর ম্যাচে হারল আরসিবি। প্রসঙ্গত, ২০২৫ আইপিএলে তারা চিন্নাস্বামীতে তিনটি ম্যাচই খেলেছে। এদিন বৃষ্টি ভেজা ম্যাচে পঞ্জাব কিংসের কাছে ৫ উইকেটে হারেন বিরাট কোহলিরা।
এদিন মূলত ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণেই হারতে হয় বেঙ্গালুরুকে। বৃষ্টির জেরে ওভার কমে ১৪-তে নেমে এসেছিল। প্রথমে ব্যাট করে তারা ১৪ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে করে মাত্র ৯৫ রান। তাও টিম ডেভিডের অপরাজিত ৫০ রানের সৌজন্যে। সেই রান তাড়া করতে নেমে পঞ্জাব কিংস ১১ বল বাকি থাকতে সহজেই ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়।
এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে তারা। এদিন ওভার কমায়, পাওয়ার প্লে খেলা হয়েছিল চার ওভারের। এই চার ওভারের মধ্যেই তিন উইকেট আরসিবি হারিয়ে বসে থাকে। শেষমেশ তারা ৯ উইকেট হারিয়ে করে ৯৫ রান।
এদিন ওপেন করতে নেমেছিলেন বিরাট কোহলি এবং ফিল সল্ট। প্রথম ওভারেই ফিল সল্টকে ফেরান আর্শদীপ সিং। ৪ বলে ৪ করে আউট হন ফিল সল্ট। এর পর ইনিংসের তৃতীয় ওভার এবং আর্শদীপের দ্বিতীয় ওভারে বিরাট কোহলিও আউট হয়ে যান। আর্শদীপের বলে মার্কো জানসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কোহলি। তাঁর সংগ্রহ ৩ বলে মাত্র ১ রান। চতুর্থ ওভারে আবার লিয়াম লিভিংস্টোনকে ফেরান জেভিয়ার বার্টলেট। তিনি করেন ৬ বলে ৪ রান।
এর পরেও উইকেট পড়া থামেনি। নির্দিষ্ট ব্যবধানে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে আরসিবি। তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়তে থাকে তাদের ব্যাটিং লাইন-আপ। শুধু টিম ডেভিডই যেটুকু অক্সিজেন দিয়েছেন। তিনি আরসিবি-র হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন। তাঁর সংগ্রহ ২৬ বলে অপরাজিত ৫০ রান। মেরেছেন তিনটি ছক্কা এবং পাঁচটি চার। তাঁর মধ্যে শেষ ওভারেই হরপ্রীত ব্রার-কে মেরেছেন তিনটি ছয়। এই তিনটি ছক্কা না হলে, বেঙ্গালুরুর হাল আরও শোচনীয় হত। এছাড়া রজত পতিদার ১৮ বলে ২৩ রান করেছেন। বাকিরা কেউ এক অঙ্কের গণ্ডিই টপকাতে পারেননি। এদিন টপ অর্ডার থেকে মিডল অর্ডার- সবাই ব্যর্থ। আরসিবি-র করা ৯৫ রানের মধ্যে ৫০ রানই টিম ডেভিডের। পুরো দল মিলে করেছে মাত্র ৪৪ রান।
পঞ্জাবের হয়ে সব বোলারই দুরন্ত বোলিং করেছেন। তবে সবচেয়ে কৃপণ বোলিং করেছেন মার্কো জানসেন, তার পর যুজবেন্দ্র চাহাল। জানসেন ৩ ওভার বল করে ১০ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। যুজি আবার ৩ ওভারে ১১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ৩ ওভারে ২৩ রান দিয়ে আর্শদীপ নিয়েছেন ২ উইকেট। ২ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন হরপ্রীত ব্রার। জেভিয়ার বার্টলেট একটি উইকেট নিয়েছেন।
সহজ জয় পঞ্জাবের
রান তাড়া করতে নেমে পঞ্জাব কিংসের পাঁচ উইকেট পড়েছে বটে, তবে জিততে কোনও সমস্যা হয়নি। তারা ১২.১ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৮ রান করে ফেলে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান নেহাল ওয়াধেরার। ৩টি করে চার এবং ছয়ের হাত ধরে তিনি করেছেন ১৯ বলে অপরাজিত ৩৩ রান। বাকিরা অবশ্য কেউ ২০ রানের গণ্ডি টপকাননি। প্রিয়াংশ আর্য ১১ বলে ১৬ করেন। ৯ বলে ১৩ করেন প্রভসিমরন সিং। ১০ বলে ৭ করেন পঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। জোস ইংলিশ করেন ১৭ বলে ১৪ রান। আরসিবি-র হয়ে জোশ হেজেলউড ৩ ওভার বল করে ১৪ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন। তবে তাঁর এই লড়াই এদিন কাজে এল না। এছাড়া ৩ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন ভুবনেশ্বর কুমার।