রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বর রেখেই কেন্দ্রীয় সরকার যাতে মুর্শিদাবাদে শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফেরাতে পদক্ষেপ করে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি লিখে সেই আবেদন করলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস(Cv Anand Bose)। সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য অনুসারে, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে শনিবার (১২ এপ্রিল, ২০২৫)।
রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই যে মুর্শিদাবাদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপাল বোসের কথা হয়েছে, চিঠিতে সেকথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে, এখনও পর্যন্ত – জঙ্গিপুর, সুতি, সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান-সহ মুর্শিদাবাদ জেলার যেখানে যেখানে যত অশান্তি ও হিংসার ঘটনা ঘটেছে, সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য অমিত শাহের মন্ত্রকে পাঠানো রাজ্যপালের সংশ্লিষ্টি চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে।
সূত্রের দাবি, নানা ইস্যুতে রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে মতানৈক্য হলেও মুর্শিদাবাদে শান্তি ফেরানোর বিষয়ে দুই পক্ষ সহমত হয়েছে। সেই কারণেই সংশ্লিষ্ট চিঠিতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আবেদন করেছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। রাজভবনের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
রাজভবন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ ও আন্দোলন চলার সময় মুর্শিদাবাদের নানা প্রান্তে যেভাবে হিংসা ছড়িয়েছে, তাতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল। তিনি নিজে ওই জেলার প্রতি মুহূর্তের খবর রাখছেন এবং খোঁজ নিচ্ছেন। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে বিশদে আলোচনার পরই সবদিক বিবেচনা করে শাহের মন্ত্রকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বোস।
এদিকে, মুর্শিদাবাদে শান্তি ফেরাতে ইতিমধ্যে কেন্দ্রও তৎপর হয়েছে বলে দাবি সূত্রের। শনিবারই কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের। তাঁরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সমাজমাধ্যমে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা দিয়েছেন। আবার, অশান্তি বাগে আনতে প্রথমে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের আবেদনে উপদ্রুত এলাকায় বিএসএফ ও পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও মৃত্যু ঠেকানো যায়নি। হিংসার বলি হতে হয়েছে একাধিক মানুষকে। পাশাপাশি, হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে অন্তত ১৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কারা হিংসা ছড়াচ্ছে বা তাতে মদত দিচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।