মৈপীঠে আবার বাঘ–বন্দি খেলা শুরু

Spread the love

এবার দুয়ারে এসে পৌঁছেছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। তাই আবার বাঘ আতঙ্কে কাঁপছে কুলতলির মৈপীঠের গুড়গুড়িয়া গ্রাম। কারণ শনিবার বেশি রাতে গৃহস্থের বাড়ির উঠোনে উপস্থিত হয় দক্ষিণরায়। এমনকী রীতিমতো গর্জন করে সে। বুঝিয়ে দেয় শীতের রাতে সে ক্ষুধার্ত। যদিও কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে পরে নিজেই সেখান থেকে ফিরে যায়। আজ, রবিবার সকালে উঠোনে দক্ষিণরায়ের পায়ের ছাপ এবং নখের আঁচড় দেখে আতঙ্কে গায়ে কাঁটা দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। সারারাত আতঙ্কে সিঁটিয়ে ছিলেন গ্রামবাসীরা। বন দফতর আজ সকালে এসে এলাকায় নজরদারি শুরু করেছে। আর সন্ধান করছে কোন পথে গিয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।

এদিকে মৈপীঠের দেবীপুরের বাসিন্দারা জানান, গর্জন শুনে কোনও আওয়াজ না করে লুকিয়ে তাঁরা বাঘ দেখেছেন। এক বাড়িতে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে বাঘ বেশ কয়েকবার মেঝেতে আঁচড় কাটে এবং গর্জন করে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ‘বেশি রাতে আমরা তখন খাওয়াদাওয়া করে উঠে সবে বসেছি। বাইরে হঠাৎ একটা বাঘের গর্জনের আওয়াজ পেলাম। দরজা দিয়ে তখন উঁকি মেরে দেখি, মেঝেতে বাঘ আঁচড় কাটছে। আমরা সকলেই দেখতে পেয়েছি। আর বাথরুমের দরজাতেও আওয়াজ করে পিছনের রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে যায়।’‌ এখানে জন্মেজয় গিরির পরিবার বাস করেন। জন্মেজয়ের ছেলের বউ দেবীকা গিরি বাড়িতে শুয়ে ছিলেন। তখনই বাড়ির উঠোনে আগমন হয় দক্ষিণরায়ের।

অন্যদিকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার গর্জনে বারবার কেঁপে ওঠে গিরি পরিবার–সহ গ্রামের বাসিন্দারা। ঘরের ভিতরে বসে আতঙ্কে তখন কাঁপছিলেন জন্মেজয়ের পরিবারের সদস্যরা। অবশেষে স্বস্তি আসে যখন দেখা যায় বাঘ ফিরে গিয়েছে। তবে তারপরেও সারারাত আতঙ্ক কেটেছে সকলের। সম্প্রতি মৈপীঠ চত্বরে একের পর এক বাঘের আগমন ঘটছে। গত রবিবারও একটি বাঘকে খাঁচাবন্দি করা হয়েছিল। তারপরও আবার এমন ঘটনায় আতঙ্ক কাটেনি। মৈপীঠে অনেকেই শনিবার রাতে ঘুমোতে পারেননি। রাতেই খবর দেওয়া হয় বন দফতরকে। বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকা পরিদর্শন করলেও বাঘ ধরা পড়েনি। তাঁরা এখনও নজর রাখছেন। অনুমান করা হচ্ছে, বাঘটি গ্রামের পাশের জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে।

এছাড়া স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জয়দেব প্রধান ওরফে বাবলু জানান, খবর দেওয়া হতেই রাতে বন দফতর এবং কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা এলাকায় এসে ঘোরাফেরা করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কুলতলির একাধিক এলাকায় ১৭ বার বাঘের দেখা মিলেছে। এই প্রথম কুলতলিতে এত বেশি বার বাঘের দেখা মিলল। যা এলাকার মানুষজনকে আতঙ্কে রেখেছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সুন্দরবনের দিকে ৪৭ কিলোমিটার ফেন্সিং নেট থাকলেও এখন অকেজো। বারবার মৈপীঠের গ্রামে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত রবিবারও একটি বাঘকে খাঁচাবন্দি করে বন দফতর অন্যত্র ছেড়ে দেয়। কুলতলির কিশোরীমোহনপুর এলাকায় বাঘ ঢোকার খবরও এসেছিল। পরে খাঁচায় ধরা দেয় বাঘ। আবার শনিবার রাতে একই আতঙ্ক ছড়াল গ্রামে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *