যেভাবে ‘রতন টাটা’ হয়ে ওঠেন তিনি

Spread the love

ধনকুবের রতন টাটা মুম্বাইতে জন্ম নেন ১৯৩৭ সালে। তার বাবা নাভাল টাটা পরিবারে এসেছিলেন দত্তক সন্তান হিসেবে। রতনের বয়স যখন ১০ বছর, তখন তার মা-বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। সে সময় থেকেই ঠাকুরমা নভাজিবাই টাটা তার দেখাশোনা করেন।

রতনের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় মুম্বাইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সেখানেই পড়াশোনা করেন। এরপর তাকে ভর্তি করানো হয় মুম্বাইয়ের ক্যাথিড্রাল অ্যান্ড জন কনন স্কুলে। পরে তিনি শিমলার বিশপ কটন স্কুল এবং আমেরিকার নিউইয়র্কের রিভারডেল কান্ট্রি স্কুলেও পড়াশোনা করেন। ১৯৫৫ সালে রতন গ্র্যাজুয়েট হন। ১৯৫৯-এ কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

পড়াশোনা শেষ করে তিনি সত্তরের দশকে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। তাকে প্রথমে টাটা গ্রুপের ব্যবস্থাপক স্তরের একটি পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৯১ সালে জেআরডি টাটা দায়িত্ব ছাড়লে রতন টাটাকে নিজের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন। প্রথমে তাকে নিয়ে আপত্তি ছিল গ্রুপের ভেতরে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে তার।


রতন টাটার হাতে যে ২১ বছর টাটা গ্রুপের দায়িত্ব ছিল, তাতে গ্রুপের আয় বেড়ে হয় ৪০ গুণ, মুনাফা বাড়ে ৫০ গুণ। মধ্যবিত্তকে চার চাকার স্বপ্ন দেখান রতন টাটাই। তার হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুরে গড়ে ওঠে ন্যানো কারখানা। যদিও রাজনৈতিক টানাপড়েনে পরে গুজরাটে টাটার ওই কারখানা সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়। 

২০১২ সালে ৭৫ বছর বয়সে টাটা গ্রুপের নির্বাহী ক্ষমতা ছেড়ে দেন রতন টাটা। সেই জায়গায় পারিবারিক আত্মীয় সাইরাস মিস্ত্রিকে আনা হয়। কিন্তু ২০১৬ সালে সাইরাসকে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। ফের অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে ফেরেন রতন টাটা। এরপর ২০১৭ সালে নটরাজন চন্দ্রশেখরনকে অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে সমাজসেবামূলক কাজে আরও বেশি করে যুক্ত হন রতন টাটা।

২০০০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পান রতন। এরপর ২০০৮ সালে পান ‘পদ্মবিভূষণ সম্মান’। মহারাষ্ট্র ও আসাম সরকারও তাকে সম্মান প্রদান করে। ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স, আইআইটি বম্বে, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, রাজা তৃতীয় চার্লসের থেকেও বিশেষভাবে সম্মানিত হন রতন টাটা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *