এবার কলকাতার অদূরেই পড়ল মাওবাদী পোস্টার। আর তা নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। গতকাল বেশি রাত থেকেই খড়দা স্টেশন এলাকা থেকে শুরু করে সংলগ্ন জনবহুল এলাকা দেদার পড়তে থাকে মাওবাদী পোস্টার। যা সকাল হতেই দেখতে পাওয়া যায়। এই ঘটনায় খোঁজখবর করতে শুরু করে পুলিশ। তারপরই এক মাওবাদী নেত্রী–সহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে রহড়া থানার পুলিশ। এই সাতজনই মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। কোনও পরিকল্পনা নিয়েই এখানে পোস্টার ফেলা হয় বলে মনে করছে পুলিশ।
এদিকে আজ, বুধবার এই মাওবাদীদের যখন গ্রেফতার করা হচ্ছিল তখন তারা উচ্চস্বরে স্লোগান দিতে থাকে। ধৃতদের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগ রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। এই সাতজন মাওবাদীর কলকাতা বা তার আশপাশের এলাকায় কোনও নাশকতার ছক ছিল কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে পুলিশের সঙ্গে এরা বেশ ধস্তাধস্তি করে। মেজাজ দেখায় পুলিশকে। কিন্তু বিশেষ কিছু করতে পারেনি। কারণ পুলিশ কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করে। আর একসঙ্গে সাতজনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বেশি রাতে চারজন যুবক ট্রেন থেকে খড়দা স্টেশনে নেমে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। তারপর খড়দা রেল স্টেশন চত্বরের কাছে একাধিক দেওয়ালে বেশ কিছু মাওবাদী পোস্টার সাঁটিয়ে দেয়। এইসব পোস্টার লাগিয়ে আবার দৌড়ে স্টেশনে আসে। আর শেষ ট্রেন ধরে চলে যায়। বিষয়টি নজরে পড়তেই খোঁজখবর করা শুরু হয়। ওই পোস্টারগুলিতে লেখা আছে, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র ও অন্ধ্রপ্রদেশে বিপ্লবী কৃষক যোদ্ধাদের উপর ওখানকার সরকার অত্যাচার করছে। তাই তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু ভিন রাজ্যের সরকারের ক্ষোভ বাংলার মাটিতে পোস্টার দেওয়ার সঙ্গে কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। কারণ সেখানে আরও লেখা ছিল, ‘বস্তার এবং আবুঝমার–সহ নানা এলাকায় বিপ্লবীদের রক্তে ভেজা পথে এগিয়ে যেতে হবে। ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং বিপ্লবী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এখন সেই ডাক দেওয়া হয়েছে।’ লালকালিতে লেখা ওই পোস্টারের নিচে উল্লেখ করা হয়েছে মার্কসবাদী লেলিনবাদী মাওবাদী সংগঠন। এরপরই তদন্ত শুরু করে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। পোস্টার ছিড়ে নিয়ে যায় তারা। আজ, বুধবার সকালে রহড়ার আবাসনে অভিযান চালায় রহড়া থানার পুলিশ। আর সেখানেই এক মাওবাদী নেত্রী–সহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা প্রত্যেকেই মাওবাদী স্কোয়াডের সদস্য বলে পুলিশের দাবি।