রাজ্য সরকারের উদ্যোগে চাপে অসাধু চক্র

Spread the love

রাতের অন্ধকারে বড় বড় লরিতে করে বালি–সহ নানা জিনিস পাচার হওয়ার অভিযোগ উঠছে দীর্ঘদিন। বালি চুরি–সহ নানা জিনিস পাচার ঠেকাতে রাজ্য সরকার এবার কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। অনলাইন ব্যবস্থা চালু করে সবকিছু নখদর্পণে রাখছে। তবে তার মধ্যে থেকেও অসাধু চক্রের পান্ডারা ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এই খবর আসার পর থেকে বালি খাদান থেকে রাজস্ব আদায়ের জন্য ই–চালান ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তাতে চাপে পড়ে যাওয়ায় বালি সরবরাহের গাড়ির চালকদের একাংশ ই–চালান নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। আবার কম অঙ্কের ই–চালান নিয়ে কাজ চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ এসেছে। তাই এবার বালি সরবরাহকারী গাড়িতে ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তে চাপ যে আরও বাড়ল তা বেশ বুঝতে পারছে অসাধু চক্রের পান্ডারা। এখন বালি খাদানের নিলাম করার কাজ থেকে শুরু করে রোজকার নজরদারি করছে ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন। এই সংস্থার অধীনে নথিভুক্ত আছে প্রায় এক লক্ষ লরি–ট্রাক। এই গাড়িগুলি একপ্রান্ত থেকে আর একপ্রান্তে ব্যবহার হয়। আর তাতেই বালি সরবরাহ করা হয়। বালি যেখানে লাগে সেখানে এই ট্রাক বা লরি গিয়ে তা পৌঁছে দেয়। কিন্তু কিছু অসাধু চক্রের পান্ডারা লরিতে বেআইনিভাবে বালি তুলে পাচার করে বলে অভিযোগ এসেছে। তাই এবার পরিবহণ দফতরের সাহায্যে ওই লরি–ট্রাকগুলিতেই ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ লাগানো হবে। সুতরাং কোন লরি কোন খাদান থেকে বালি তুলে কোথায় গিয়েছে সেটা জেনে নেওয়া যাবে। আর রাজ্যস্তরের কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি নজরদারি করা যাবে।

এই বালি পাচার করার জেরে রাজ্য সরকারকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বালি পাচার করার অভিযোগে বিদ্ধ করা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। এবার সেই অভিযোগ এবং তকমা গা থেকে ঝেড়ে ফেলতে কোন গাড়ি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে এবং পাচারের কাজে যুক্ত তা তৎক্ষণাৎ ধরতেই বসছে ‘জিপিএস ট্র্যাকার’। তার ফলে সমস্ত তথ্য কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি পৌঁছে যাবে পুলিশ–প্রশাসন, রেভিনিউ দফতর ও মোটর ভেহিকেলস অফিসারদের কাছে। তাঁদের মোবাইলেও আছে এনফোর্সমেন্ট অ্যাপ। সেখানেই যাবে মেসেজ। ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে বালি খাদান থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। চলতি আর্থিক বছরে সেই রাজস্ব আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এখন দেখার জল কতদূর গড়ায়।

এই ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ বসিয়ে কাজ শুরু হলে পাচার, চুরি সব আটকে দেওয়া যাবে। এখন অনলাইন পথে বালি খাদান নিলাম সুনিশ্চিত করা হয়েছে। বালি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে ই–চালান ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই অভিনব উদ্যোগকে যাতে কেউ এড়িয়ে যেতে না পারে তার জন্যই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। আর এখন প্রায় ১৮০০ হেক্টর বালি খাদান স্বচ্ছভাবে নিলাম করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশন। আগামী তিন মাসের মধ্যে আরও ৫০০ হেক্টরের বেশি পরিমাপের বালি খাদান নিলাম করা হবে। তার জন্য প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *