ট্রাম্পের পাল্টা-শুল্কের তালিকায় বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের কোপ পড়েছে। পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে, তা ঠাওরাতে সদ্যই ঢাকায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন সেদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। শনিবার বাংলাদেশের যমুনা ভবনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট নাগাদ এই বৈঠক আয়োজিত হয়। ঢাকার তরফে জানানো হয়েছে, সেদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস নিজেই আমেরিকার সরকারের সঙ্গে কথা বলে, বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন।
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের জেরে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে মুখ খোলেন খলিলুর রহমান। প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ বলেন,’ এটা আমাদের জন্য আকস্মিক কোনও বিষয় না। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে বৈঠক করতে বলেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।’ তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্র দপ্তরের অনেকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ঢাকার। তখন থেকেই ঢাকা, ওয়াশিংটন এই ইস্যুতে কথা বলছে। খলিলুর রহমান বলছেন,’সুতরাং ব্যাপারটা আকস্মিক নয়, আমরা এর জন্য প্রস্তুত। শিগগিরই আমরা একটা ব্যবস্থা নেব এবং সেটা মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেই নেব।’ এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঢাকায় যমুনায় বাণিজ্য বৈঠক শেষ হতেই এক ব্রিফিংএ বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমেরিকা থেকে বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া শুল্ক নিয়ে সরাসরি মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ তথা প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা এই নিয়ে বলেন,’ প্রধান উপদেষ্টা নিজেই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সাথে সংযুক্ত হবেন এই বিষয়ে আমাদের অবস্থানকে তুলে ধরার জন্য।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ পদক্ষেপ নিতে পারে বলে খবর। সদ্য ঢাকায় মহম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হয়। ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে এই বৈঠক হয়েছে। ‘প্রথম আলো’র খবর অনুসারে, বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন জানান, বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বৃদ্ধি একটা রাস্তা। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত আমদানি করা যাবে না। শেখ বশিরুদ্দীন বলেন,’ আমরা করণীয়গুলো বোঝার চেষ্টা করছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ তিনি বলছেন,’ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য বড় সম্ভাবনার দুয়ারও খুলতে পারে।’
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বশিরউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের ধারণা, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব না। আমাদের থেকে শুল্ক কম পাকিস্তান ও ভারতের।’ বশিরুদ্দিন বলেন,’কিন্তু আমাদের শিল্পের যে অবয়ব এবং আমাদের পণ্যের যে পরিপক্বতা, মনে হয় বড় সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যেতে পারে বাংলাদেশের জন্য।’