শেষ কবে দুর্গাপুজো আসছে বলে আনন্দ করেছি, ভুলে গেছি

Spread the love

‘কলকাতার রসগোল্লা’ অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়, একটা সময় দাপটের সঙ্গে বাংলা ছবিতে রাজ করলেও বর্তমানে নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে নিয়েছেন লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশনের দুনিয়া থেকে। একেবারে বেছে বেছে হাতেগোনা কাজ করেন তিনি। ছোট পর্দা, ওটিটিতে তাঁকে মাঝে দেখা গেলেও বড় পর্দায় সেভাবে বহু দিন ধরা দেননি নায়িকা। বহু ছবিতে না বলার পর, অবশেষে মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘শাস্ত্রী’ ছবিতে ১৬ বছর পর জুটি বেঁধে তিনি ফিরছেন বড় পর্দায়। এই পুজোতেই ছবির শুভ মুক্তি তাই জোর কদমে চলছে প্রচার। কিন্তু পুজো নিয়ে অভিনেত্রী আলাদা করে কোনও উত্তেজনা নেই, কারণ এই উৎসবের স্মৃতি তাঁর কাছে খুব সুখকর নয়, বরং উল্টোটা। কেন উৎসবের এই উদযাপন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন নায়িকা? হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে সে কথা একান্তে ভাগ করে নিলেন তিনি।

পুজোয় আসছে তাঁর নতুন ছবি ‘শাস্ত্রী’। ছবির প্রচারে বর্তমানে ব্যস্ত অভিনেত্রী। কিন্তু পুজো নিয়ে মনে জমে একরাশ দুঃখ। অভিনেত্রী জানান কোনও বছরই নাকি বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবকে ঘিরে তাঁর কোনও উৎসাহ থাকে না, বরং তিনি এই আলোয় ভরা শহর থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন। অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমার পুজোর স্মৃতি মোটেও সুখকর নয়। আমি পুজো কোনও বছরই উদযাপন করি না। শেষ কবে যে পুজো আসছে বলে আনন্দ হয়েছিল তা ভুলে গিয়েছি। এই দুর্গাপুজোর আগে থেকে কালী পুজো পর্যন্ত সময়টা আমার আর আমার পরিবারের একেবারে ভালো কাটে না। প্রতি বছর কিছু না কিছু দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের এই সময়। পুজোয় প্রায় প্রতি বছরই আমার পরিবারকে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। এটা বহু বছর ধরে চলে আসছে। আমি এখন আর তাই পুজোয় কলকাতায় থাকি না।’

এবার তবে পুজোয় তাঁর গন্তব্য কী? জানতে চাওয়া হলে, অনেকখানি মন খারাপ নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘এবারে আর কোথায়ও যাওয়ার প্ল্যান করে উঠতে পারিনি। পরিবারের একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। দিদি চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। তাঁর আগে অগস্টে আমার মামাতো ভাই মানে বড় মামার ছেলে মারা গেলেন। এইসবের মাঝে আর কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে উঠতে পারিনি।’

তাঁর এই মন খারাপ কেবল পরিবারের জন্য নয়। শহরের বুকে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘটনাতেও তিনি মর্মাহত। কিন্তু মন খারাপ থাকলেও কাজের গুরুত্ব তিনি বোঝেন, যে কাজের প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, তা থেকে কখনই মুখ ফেরানোর মানুষ নন নায়িকা। সেই জায়গায় তিনি নিজের কর্তব্যে অবিচল। তাই এই অশান্ত সময়ে মনকে খানিক স্বস্তি দিতে তিনি তাঁর নতুন ছবিকে আশ্রয় করেছেন। দর্শকদেরও এই খারাপ সময়ে মনকে একটু শান্ত করার জন্য ছবিটি দেখার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, ‘শহরের বুকে যে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গিয়েছে তাতে কারুরই মন মেজাজ ঠিক নেই। এই ঘটনায় সকলে ভারাক্রান্ত, আমিও সমানভাবে দুঃখ পেয়েছি। কিন্তু আমাদের গুরুজনেরা একটা কথা বলতেন, যখন জীবনে খুব খারাপ সময় আসে সেই সময়টা নিজের মনকে একটু হালকা করার জন্য কোথাও থেকে একটু ঘুরে আসা, বা একটু বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কথা বলা কিংবা একটা ছবি দেখা যেতে পারে। সে কথার সূত্র ধরেই বলব, আপনারা যদি একটু মনটা হালকা করতে চান তাহলে হলে গিয়ে ‘শাস্ত্রী’ দেখতে পারেন। তাতে করে আপনাদের মন একটু হলেও হালকা হতে পারে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *