স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা নিয়ে প্রতিবাদ জুনিয়র ডাক্তারদের

Spread the love

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিষিদ্ধ স্যালাইন রিঙ্গার ল্যাকটেট দেওয়ায় প্রসূতিরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার মধ্যে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। বাকিদের গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এই ঘটনায় চিকিৎসায় বড় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। তবে আরজি কর হাসপাতালের আন্দোলনে থাকা প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা এই অভিযোগ মানতে রাজি নন। তাঁরা চান, নিরপেক্ষ তদন্ত। এত পরে কেন স্বাস্থ্য দফতরের ঘুম ভাঙল? প্রশ্ন তুলেছেন দেবাশিস হালদাররা। এমনকী স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ চেয়েছেন তাঁরা। যদিও অ্যানাস্থেশিয়া–অস্ত্রোপচার করতে পারবেন না জুনিয়র ডাক্তাররা বলে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

যে ওষুধ কোম্পানির স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছিল সেই কোম্পানিকে গত ১০ ডিসেম্বর নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে একমাস পরেও সেই কোম্পানির স্যালাইন কেমন করে সরকারি হাসপাতালে ব্যবহার করা হল?‌ উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়টি নিয়েই পিজিটি দেবাশিস হালদার সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‌চিকিৎসায় গাফিলতির বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হোক। কিন্তু স্যালাইন নিয়ে আগে কেন তদন্ত হয়নি? প্রসূতি মৃত্যুর মতো ভয়াবহ ঘটনার পর স্বাস্থ্য দফতরের টনক নড়ছে। স্বাস্থ্য দফতরের নয়া নির্দেশিকা নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবশ্যই এটা নিয়ম রয়েছে যে, সিনিয়র চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে তাঁদের গাইডলাইন মেনে অস্ত্রোপচার করতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের। আর নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সিনিয়র চিকিৎসকরাই শুধু অস্ত্রোপচার করতে পারবেন।’‌

রিঙ্গার ল্যাকটেট–সহ ১০টি ওষুধ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্যের পক্ষ থেকে। এই নিষেধাজ্ঞা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দেবাশিস–সহ অন্যান্যরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘‌হঠাৎ বলা হল ওই ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। আর সরবরাহও করা হবে না। তাহলে এগুলির পরিবর্তে কী ওষুধ ব্যবহার করা হবে?‌ সেটাও জানানো হচ্ছে না। রাজ্যে তো সব চিকিৎসা বিনামূল্যে হয়। ওষুধও পাওয়া যায়। তাহলে রোগীদের বাইরে লাইন দিয়ে ওষুধ কেনার উপক্রম কেন?‌ জবাব দিতে হবে।’‌ স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের কাছে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে প্রসূতি মৃত্যুর ক্ষেত্রে জুনিয়র ডাক্তারদের অনভিজ্ঞতাই একমাত্র কারণ। তাঁদের হাতে সব ছেড়ে দেওয়াতেই বিপত্তি।

এই স্যালাইন কাণ্ডের পর নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, মেদিনীপুর হাসপাতালে শুধুমাত্র এমডি এবং এমএস ডিগ্রিধারীরা অ্যানাস্থেশিয়া ও অস্ত্রোপচার করতে পারবেন। জুনিয়র ডাক্তাররা নন। দেবাশিসের অভিযোগ, গত ৭ ডিসেম্বর মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে আরএল নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?‌ তদন্ত করে দেখা উচিত। আর সবই যদি সিনিয়র চিকিৎসকরা করেন তাহলে আমরা শিখব কী?‌

এই স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে ষড়যন্ত্র আছে বলে মনে করেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলেছেন, দোষীদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে। সেখানে দেবাশিস হালদারের কথায়, ‘‌স্বাস্থ্যসচিবের পদে থাকার কোনও যোগ্যতা নেই। তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। কিছু মৃত্যু আটকানো সম্ভব হয়। এই ঘটনা তেমনই। আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে আটকানো যেত। তাই এই ঘটনার দায় সম্পূর্ণভাবে স্বাস্থ্য দফতরকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রককে, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে।’‌

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *