কদিন আগেই ‘পদ্মশ্রী’ প্রাপকদের তালিকায় বাংলা থেকে নাম এসেছে মমতা শঙ্করের। অভিনয় ও নাচ দিয়ে তিনি লাখ লাখ মানুষের মনে দোলা দিয়েছেন ঠিকই, তবে বর্তমান সময়ে যেন বিতর্কের কালো মেঘ ঘিরে রেখেছে তাঁকে। মমতা শংকর মুখ খুললেই যেন রে রে করে তেড়ে আসছেন কিছু ব্যক্তি, যাতে আমজনতাও রয়েছেন, আবার টলিউডের নামিদামি তারকাও। শুরুটা হয়েছিল শাড়ি বিতর্ক দিয়ে, আপাতত আটকে চুমুতে। ফের মমতা শঙ্করের একটি সাক্ষাৎকারের ক্লিপিংস ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়াতে। যেখানে তিনি প্রশ্ন তুলছেন, হাতে সিগারেট নিয়ে অন্যভাবে আঁচল নেওয়া মহিলারা কি কখনো ব্লাউজ না পরে, হাতে পতাকা নিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়া মাতঙ্গিনী হাজরার থেকে বেশি মডার্ন?
কদিন আগে কালীঘাট স্টেশনে চুম্বন করতে দেখা যায় এক যুগলকে। একটি ভিডিয়ো ছড়ায়, যাতে স্পষ্ট হয়, তাঁদেরকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে রীতিমতো অস্বস্তিতে আশেপাশের মানুষ। আর তারপরই এই চুমু-কাণ্ড ঝড় তোলে শহর কলকাতায়। তবে মমতা শঙ্কর কার্যত এর প্রতিবাদ করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, ভালোবাসা দেখানোর জন্য পার্ক রয়েছে, লেকের ধার রয়েছে। পাশ্চাত্যে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া হলেও, এটা কখনোই ভারতীয় সংস্কৃতি নয়। আর বাঙালি বর্তমানে নিজের সংস্কৃতিকে ভুলছে। সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের উপর এই ধরনের ঘটনা ‘খারাপ প্রভাব’ ফেলতে পারে বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘এরপর তো সমস্ত কিছু করার সাহস হয়ে যাবে। স্থান, কাল, পাত্রের কোনও জ্ঞান থাকবে না? জন্তুরা অনেক ভালো আমাদের থেকে।’ এই মন্তব্যের কারণে সমালোচিত হন মমতা শঙ্কর।
মাতঙ্গিনী প্রসঙ্গ টেনে কী বললেন মমতা শঙ্কর?
ভাইরাল হওয়া ক্লিপিংসটি হল সেই সাক্ষাৎকারের, যেখানে তিনি স্পষ্ট করেছেন, প্রকাশ্যে চুমুর নিন্দা করায়, তাঁকে নিয়ে কে ট্রোল করল, কতটা ট্রোল করল তা গায়ে মাখেন না বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। মমতা শঙ্করকে টিভি নাইনের সেই সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা গেল, ‘আগেকার দিনের যারা, এই মাতঙ্গিনী হাজরা। তিনি ব্লাউজ পরতেন না। তিনি ঝান্ডা উঠিয়ে গেছেন। নিজের প্রাণ দিয়েছেন। তাঁকে কি রিগ্রেসিভ বলবে। তাঁকে কী বলবে তুমি? তাঁর থেকে মডার্ন তুমি? হাতে একটা সিগারেট ধরে, আঁচলটা অন্যভাবে নিয়ে। বা সবার সামনে চুমু খাওয়া যে আমি আমার পার্টনারকে কতটা ভালোবাসি। এটা কি দেখাতে হবে তোমাকে?’
এই সাক্ষাৎকারে মমতা শঙ্করকে আরও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমার ট্রোল করা হচ্ছে, তার কারণ আমি কাটাকাটা ভাষায় জবাব দিচ্ছি। আমি তো কারও উপর কিছু চাপিয়ে দিচ্ছি না। ঠিক করে দিচ্ছি না যে, এই পোশাক পরতে হবে। নিজের স্বার্থেও কিছু বলছি না। আমারও স্বাধীনতা আছে কথা বলার, বাকিদের মতোই। ভুল জিনিস দিয়ে নিজেদের প্রগতিশীল প্রমাণ করা যায় না। পথেঘাটে অস্বাভাবিক কিছু দেখলে নিজে থেকেই সেই দিকে নজর চলে যায়। খোলামেলা পোশাক পরলে আমাদের মেয়েদেরই নজর সেই দিকে চলে যায়। মেয়ে হিসেবে মান সম্মান বোধ থাকা জরুরি। আর প্রতিটা মেয়ের সেটা ধরে রাখা প্রয়োজন।’