হোয়াট্সঅ্যাপে ‘অশ্লীল মেসেজ’ পাঠালেন প্রাক্তন CPI(M) সাংসদ?

Spread the love

আবারও মহিলাঘটিত বিতর্কে জড়াল সিপিআই(এম)। এবার যাঁকে নিয়ে সমাজমাধ্যমে শোরগোল শুরু হয়েছে, তিনি যথেষ্ট সিনিয়র! দলের প্রাক্তন সাংসদ। তাঁর বিরুদ্ধে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অশালীন বার্তা পাঠানোর অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন দলেরই এক আঞ্চলিক নেত্রী। বিষয়টি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় খোলাখুলি সমালোচনা শুরু করে দিয়েছে সিপিআই(এম)-এর মহিলা ব্রিগেড। গোটা ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ দলীয় নেতাকর্মীদের একটা বড় অংশ। বারবার এই ধরনের অভিযোগ উঠে আসায় শাসক থেকে শূন্য়ে পৌঁছে যাওয়া বামদলের ভাবমূর্তি যে আরও কালিমালিপ্ত হবে, তা ভালোই বুঝছেন তাঁরা।

যাঁকে নিয়ে এত কথা, তিনি হলেন আসানসোলের প্রাক্তন সিপিআই(এম) সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী। সমাজমাধ্যমে কিছু ভার্চুয়াল চ্যাটের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়েছে, যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে, সেই স্ক্রিনশটগুলি হাতিয়ার করেই দাবি করা হচ্ছে, মুর্শিদাবাদের এক দলীয় নেত্রীকে মেসেঞ্জার ও হোয়াট্সঅ্য়াপে আপত্তিকর, যৌন উত্তেজনামূলক এবং অশালীন মেসেজ করেছেন বংশগোপাল। যদিও হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা এই সমস্ত চ্য়াটের সত্যাসত্য যাচাই করেনি।

যদিও সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন সংশ্লিষ্ট সিপিআই(এম) নেত্রী। তিনি আনন্দবাজার ডট কম-কে জানিয়েছেন, ‘ফেসবুকে আমার বিভিন্ন পোস্টে বংশগোপাল মন্তব্য করতেন। আমি তাতে প্রথমে আপ্লুত হয়েছিলাম। কারণ, উনি বড় নেতা এবং প্রাক্তন সাংসদ। আমার মতো সাধারণ কর্মীর পোস্টে ওঁর মতো যদি কেউ মন্তব্য করেন, তা হলে ভালো লাগাটা স্বাভাবিক। কিন্তু, পরবর্তীকালে পরিস্থিতি বদলে যায়।’

শোনা যাচ্ছে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর ওই মহিলা দাবি করেছেন, তিনি সাংবাদিকতার মধ্যেও রয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘একটি সংগঠনের বিষয়ে আমাকে তথ্য দেবেন বলে বংশগোপাল জানিয়েছিলেন। সেই তথ্য না পেয়ে আমি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। পরবর্তীকালে উনি আমাকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশ্লীল মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন।’

তাঁর আরও দাবি, ‘জেলায় দলের যে মুখপত্র রয়েছে, আমি তার সঙ্গে যুক্ত। সাংবাদিকতা বিষয়টি আমার মধ্যে রয়েছে। তাই আমি বংশগোপালকে আমার হোয়াট্‌সঅ্যাপ নম্বর দিয়েছিলাম। বুঝতে চেয়েছিলাম, উনি কী কী করতে পারেন। তারপরই সেখানে তিনি আগল ভেঙে মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন।’

মহিলার আরও অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে গত বছরের (২০২৪) নভেম্বর মাসেই দলের জেলা নেতৃত্বকে তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, তারপরও প্রাক্তন সাংসদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

যদিও দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন। দলীয়ভাবে সমস্তটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করা হলেই যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।

অন্যদিকে, বংশগোপাল নিজে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। পালটা খাড়া করেছেন ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব। তাঁর বিরুদ্ধে লবিবাজি চলছে বলেও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ। এমনকী, সেই লবিতে দলের ভিতরের এবং বাইরের লোকও থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন তিনি! বংশগোপালের দাবি, অভিযোগকারিণী তাঁর কাছে কিছু সুযোগ সুবিধা চেয়েছিলেন। সেসব না পাওয়াতেই এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে মহিলাঘটিত কারণেই দলে কার্যত ব্রাত্য় হয়ে যান রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। সম্প্রতি দলের প্রবীণ নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন এক তরুণী সাংবাদিক। পরবর্তীতে আরও এক তরুণ নেতার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ ওঠে। আর, এবার কাঠগড়ায় তোলা হল দলের প্রাক্তন সাংসদকে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *