‘৩০% জুনিয়র ডাক্তার কোটি টাকা দিয়েই ডাক্তারি পড়েছে’

Spread the love

আরজি কর আবহে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি ঘিরে ফের সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। শুরু থেকে প্রবল জনসমর্থন পেয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন। নেটপাড়ার একটা বড় অংশ জুনিয়র চিকিৎসকদের সমর্থনে। শাসকদল সমর্থকরা অবশ্য সেই দলে নেই। অন্যদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদী মুখ প্রাইভেট কলেজে কোটি টাকা দিয়ে ডাক্তারি পড়েছেন, এমন কথা বলে আলোচনার কেন্দ্রে পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়।

কারুর নাম না নিলেও নিন্দকদের ধারণা কিঞ্জল নন্দকে বিদ্রুপ করেই ছিল অনিকেতের ওই স্টেটাস। সেখানে পরিচালক লিখেছিলেন, ‘….১ কোটি টাকা ডোনেশন দিয়ে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে পড়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের বিপ্লবী মুখ। বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক’। অনিকেতের পরোক্ষ কটাক্ষের জবাবে কিঞ্জল প্রকাশ্যে এনেছিলেন তাঁর জয়েন্টের ব়্যাঙ্কিং। কিন্তু তারপরেও এই তরজায় ইতি পড়ল না।

মঙ্গলবার রাতে ইউটিউব ভিডিয়ো পোস্ট করে বিস্ফোরক দেবের ‘কবীর’ পরিচালক। তিনি বলেন, ‘ইঞ্জিয়ারিং-ডাক্তারি পড়তে চান? NEET পরীক্ষায় পাশ করতে চান? আছে তো ব্যবস্থা… ৫০ লাখে কেবল প্রশ্নপত্র নয় থাকা,খাওয়া-সহ উত্তর পর্যন্ত মুখস্থ করিয়ে হলে পাঠানো হচ্ছে। কারা মেধায় পাশ করছে, কারা টাকা দিয়ে প্রশ্নপত্র নিয়ে বোঝাই যাবে না…. এর পরেও ফেলটুসদের জন্য রয়েছে ঝাঁ চকচকে প্রাইভেট কলেজ। ম্যানেজমেন্ট কোটা এবং এনআইআর কোটায় আছে ৬৭% আসন। প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে ৬৭% আসন টাকা দিয়ে পাওয়া যায়’।

এরপর পরিচালক জানান, কলকাতায় কেপিসি কলেজের ঘোষিত এনআরআই কোটার মূল্য ২ কোটি টাকা! প্রসঙ্গত, এই কলেজ থেকেই ডাক্তারি পাশ করেছেন কিঞ্জল। সেই নথিও নিজের ভিডিয়োতে যোগ করেন পরিচালক। এরপর একের পর এক প্রাইভেট কলেজে এনআরআই কোটায় ডাক্তারি পড়ার খরচ জানান পরিচালক। জোর দিয়ে বলেন, এই কলেজের ৬৭% সিট বিক্রি হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। প্রত্যেক কলেজের অফিসিয়্যাল ওয়েবসাইটেই এই টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা থাকে। যদিও বাস্তবে সেই টাকার অঙ্ক আরও বেশি বলে দাবি পরিচালকের।

পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে ৯টা বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ১৫০০ আসন রয়েছে। যার মধ্যে ৪৯৫টা স্টেট কোটা। অর্থাৎ যারা আগে জয়েন্ট বা নিট পরীক্ষা দিয়ে আসা এই রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সেগুলি। বাকি এক হাজার ৫ জন কোটি কোটি টাকা দিয়েই ডাক্তারি পড়েন। অর্থাৎ প্রতি বছর ১০০৫ জুনিয়র ডাক্তার বাংলায় মেধা নয়, টাকার বিনিময়েই ডাক্তারি পড়েন।

অনিকেত বলেন, ‘এঁরাও আছেন জুনিয়র ডাক্তারদের ওই আন্দোলনে। এদের মুখে বিপ্লব কথাটা শুনতে আমোদ লাগে…. যেটা সত্যি সেটাই বলেছি। ঠাকুর ঘরে কে রে বলে লাফানোর কিছু হয়নি’।

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর কারুর নাম না করেই ফেসবুকে কিঞ্জল লেখেন, ‘আমার ভদ্রতাকে দুর্বলতা ভাববেন না,ওটাই আমার জোর’। এর আগে ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়রকে টাকা দিয়ে ডাক্তারি পড়া নিয়ে জবাব দিয়েছিলেন কিঞ্জল। বলেছিলেন, ‘ যে বছর আমি পরীক্ষা দিই সেইবছর আমাদের ওয়েস্ট বেঙ্গলে টোটাল সিট ছিল বোধ হয় ৯০০ র কাছাকাছি। তখন এত মেডিক্যাল কলেজ হয়নি। আমি ব়্যাঙ্ক করেছিলাম ৮৫৯ (জেনারেল ক্যাটেগরি), কিছুটা শেষের দিকে, জেলার কিছু গভর্নমেন্ট কলেজে চান্স পাচ্ছিলাম, শেষের দিকে। কিন্তু যেহেতু বাবা-মা একা থাকেন, আমি বাইরে যেতে চাইনি। বরাবরই আমি ঘরকুনো। তারপর কাউন্সেলিংয়ে আমি KPCতে পাই। তখন KPC-তে গভর্নমেন্টের ৫০টা সিট ছিল। তার মধ্যে আমি প্রবেশ করি।’ 

বেসরকারি কলেজে সরকারি কোটার সিটেও ব্যায়বহুল ডাক্তারি পড়া। কিঞ্জল জানিয়েছেন, তাঁর মোট খরচ হয়েছিল ৫ লক্ষ। সেই টাকা ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছিলেন তিনি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *