শিব মন্দির ভাঙা’র বদলা নিতে মসজিদে হামলা? 

Spread the love

শারদোৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে অশান্ত হয়ে উঠেছিল উত্তর ত্রিপুরার পেকুছাড়া এলাকা। কিন্তু, স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ, তৎপরতা ও হস্তক্ষেপে আপাতত সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

নতুন করে যাতে কোনও অশান্তি না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় বাসিন্দা এবং সংশ্লিষ্ট সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। তার জেরেই শান্তি ফিরেছে বলে দাবি করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ধলাই জেলার পুলিশ সুপার তথা উত্তর ত্রিপুরা জেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক অবিনাশ রাই জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিবদমান দুই সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত সাতটি বৈঠক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি এখন শান্তিপূর্ণ রয়েছে। আমরা সবদিকেই নজর রাখছি। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বা বিএনএস-এর ১৬৩ নম্বর ধারা অনুসারে, আমজনতার গতিবিধি ও জমায়েতের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে, কোনওভাবেই যাতে ভুয়ো খবর না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে এখনও পর্যন্ত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।’

পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার পর তাঁরা এই বিষয়ে সরকারিভাবে বিবৃতি প্রকাশ করবেন। তিনি বলেন, পেকুছাড়ার যেসমস্ত জায়গায় হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল, সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তার স্বার্থে যথাযথ পরিমাণে বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে উত্তর ত্রিপুরা জেলার এই অংশে হঠাৎই একটি শিব মন্দিরের উপর হামলা চালানোর খবর রটে যায়। অভিযোগ ওঠে, সেখানে নাকি রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পর পালটা হামলা চালানো হয় এলাকারই নির্মীয়মাণ একটি মসজিদ চত্বরে। সেখানেও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।

এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বৃহস্পতিবার সম্পূর্ণ অন্য কথা বলেন পুলিশ সুপার। পুলিশ প্রশাসনের দাবি, ওই শিব মন্দিরটির কোনও স্থায়ী স্থাপত্য বা নির্মাণ ছিল না। মন্দিরের মাথায় ছিল টিনের ছাউনি এবং সেগুলি কোনও মতে দাঁড় করানো ছিল চারটি নড়বড়ে কাঠের স্তম্ভের উপর। পুলিশের অনুমান, খুব সম্ভবত নড়বড়ে ওই কাঠামোটি আপনা-আপনিই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।

এর আগে বুধবার পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবার সকালে ওই শিব মন্দিরটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তারপরই একদল দুষ্কৃতী স্থানীয় একটি নির্মীয়মাণ মসজিদ চত্বরে হামলা চালায়। দুষ্কৃতীদের পরিচয় জানা যায়নি বলেও বুধবার দাবি করেছিল পুলিশ।

যদিও ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পুলিশ দেরি করেনি। এবং তারা পৌঁছেই হামলাকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এই ঘটনার পর এলাকায় যাতে কোনও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে সরকারের তরফে মোবাইলের ইন্টারনেট ও টেক্সট মেসেজ পরিষেবা ৭২ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *