৫৭ বছর বয়সে বাইকে চড়ে দেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক দম্পতি। দাম্পত্য জীবন ৩২ বছর হল। আর এই ৩২ বছর বৈবাহিক জীবনে স্ত্রীর উৎসাহে হিরো xpluse বাইক নিয়ে পুরুলিয়া(Purulia), রাঁচি, জামশেদপুর, পত্রাতু ভ্যালি,দার্জিলিং(Darjeeling), গালুডি,ঘাটশিলা ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন।কলকাতার নিমতলা স্ট্রিট রোডে বাড়ি অলোক সাঁধুখার(Aloke Sadhukhan)।বয়স ৫৭। তার স্ত্রী মীনাক্ষী সাধুখাঁ(Meenakshi Sadhukhan)। বয়স ৫৭। রয়েছে একমাত্র ছেলে, পুত্রবধূ, ও একটি ফুটফুটে নাতি। সাংসারিক জীবনে খুবই খুশি তারা। যাকে বলা যায় হ্যাপি ফ্যামিলি। ১৯৯২ সালে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করে বিয়ে করেছিলেন তারা। বিয়েটা হয়েছিল প্রেম করেই। বিয়ের পর সংসার জীবনে খুব একটা ঘোরাফেরা করেননি তারা। যতটুকু ঘুরেছেন তা ট্রেনে চড়েই।তবে এখন তার স্ত্রী অলোক বাবুকে বলেন, অনেক তো হল এবার নয় আমরা আমাদের মতন করে জীবন ও প্রকৃতিকে দেখি। তবে সেই প্রকৃতি দর্শন কোনও চার চাকার গাড়ি কিংবা ট্রেন, বাসে নয়। প্রকৃতি দর্শন আমরা করবো কিন্ত তা হবে দুই চাকার মাধ্যমে। অর্থাৎ বাইকে গোটা দেশ ঘুরবো। আজ্ঞে হ্যাঁ, স্ত্রীর মনের জোড় ও নিজের ইচ্ছাতেই কিছু না ভেবেই হিরো বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন দম্পতি। বয়স অনেকটা বেশি হলেও ভয় ডরকে তোয়াক্কা না করে মনের জোড় নিয়ে খুব সহজেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘুরে এসেছেন তারা। এমনকি তারা স্কুটি চালিয়ে গোটা দার্জিলিং ঘুরেছেন। অলোক বাবু জানান, খুব শীঘ্রই তিনি ও তার স্ত্রী বুলেট চালিয়ে বেনারস ঘুরতে যাবেন। তাদের পরের প্ল্যান বেনারস। মা, বাবার বাইক চালিয়ে ঘুরতে যাওয়াকে কোনওভাবেই আটকান না ছেলে। জানা যায়, ছেলে নিজে মা, বাবাকে উৎসাহ দেন।
অলোকবাবুর স্ত্রী হলেন জিপিএস। মানে বুঝতে অসুবিধা হল? মানে হল অলোকবাবু যখন বাইক চালান, তখন ম্যাপ নিয়ে পিছনে বসে থাকেন তার স্ত্রী। তার স্ত্রীই সমস্ত রাস্তা ঘাট গাইড করেন। কোন দিকে যেতে হবে,কোন দিকে সিগন্যাল আছে, ভিড় ভাট্টা আছে কি না সব কিছু মুখে মীনাক্ষী দেবীই বলেন। তাদের পুরুলিয়া ভ্রমণে একটি অভিজ্ঞতাও হয়, যেখানে জিপিএস ভুল গাইড করায় রাস্তা খারাপ হওয়ায় ছোট দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় তাদের। প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বাইক নিয়ে পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের মধ্যে দিয়ে ওই দম্পতিকে আসতে হয়, যা তাদের আজও স্মরণীয়। তবে তারা জানান, গ্রামের প্রত্যেকটা মানুষ খুবই ভালোভাবে গাইড করেন, যার ফলে খুব একটা অসুবিধা হয়নি।যারা বয়সের কারণে বাইক চালিয়ে ঘুরতে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না তাদের উদ্দেশ্যে অলোকবাবু বলেন, মনের সাহস নিয়ে একবার বেড়িয়ে পড়ুন, দেখবেন কোনও বাধাই সামনে আসবে না, আর প্রকৃতিকে উপভোগ করতে হলে বাইকই একমাত্র রাস্তা। অলোকবাবু ও তার স্ত্রী মীনাক্ষী সাধুখাঁর এই বয়সে দাঁড়িয়ে মনের জোড়কে স্যালুট জানাই ইনিউজবাংলার পক্ষ থেকে। মনের জোড় থাকলে কি না সম্ভব তা পরতে পরতে প্রমাণ করছেন এই দম্পতি।