মার্কিন শুল্ক নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারব না, সতর্ক থাকতে হবে

Spread the love

ইতিমধ্যেই পড়শি দুই দেশের বিরুদ্ধে ‘শুল্ক যুদ্ধে’র ঘোষণা করে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump)। সঙ্গে চিনের ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। শত্রু-মিত্র কাউকেই রেয়াত করছেন না। এই আবহে ভারতেরও ওপরেও কি নেমে আসবে মার্কি শুল্ক নামক খাঁড়া? এই নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের তরফ থেকে সম্প্রতি প্রশ্ন করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে। যার জবাবে নির্মলা অকপটে বলেন, ‘আমরা ঠিক জানি না যে আমাদের ক্ষেত্রে কী হবে। চিন, মেক্সিকো, কানাডার ওপরে ইতিমধ্যেই শুল্ক চাপিয়েছে আমেরিকা। এর প্রভাব আমাদের ওপরেও পড়বে। এখ হয়ত এর প্রভাব পরোক্ষ ভাবে আমাদের ওপরে পড়বে। তবে আমাদের ওপর সরাসরি এর কোনও প্রভাব পড়বে কি না, সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না। আমরা বিষয়টির ওপরে নজর রাখছি। তবে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমরা কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি না।’ 

এদিকে নির্মলা সীতারামনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভারতকে এই ‘শুল্ক যুদ্ধ’ থেকে কীভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়? এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বললেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে সব ইন্ডাস্ট্রিই যেন নতুন মার্কেট খুঁজে নিতে পারে। আত্মনির্ভরতার কারণেই আমাদের উপভোক্তাদের যা প্রয়োজন, তা আমরা দেশেই তৈরি করতে পারব। তবে রফতানি জারি রাখতে নতুন মার্কেটও খুঁজতে হবে। এর জন্যে আরা এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন এবং এক্সিম ব্যাঙ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছি। আমাদের বাণিজ্যে যে সব প্রতিষ্ঠান সাহায্য করতে পারে, সেগুলিকে আমরা আরও শক্তিশালী করছি।’ 

এদিকে অর্থমন্ত্রীকে আরও প্রশ্ন করা হয়, কাস্টম ডিউটি কি ট্রাম্পের জন্যেই কমানো হচ্ছে? এর জবাবে নির্মলা বলেন, ‘কাস্টম ডিউটি ব়্যাশনালাইজেশন গত দু’বছর ধরে চলছে। সেই ধারা বজায় রেখেই এবারও কাস্টম ডিউটি ব়্যাশনালাইজ করা হয়েছে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের দেশে যা নেই, সেই সব পণ্য যাতে কোনও শুল্কের বোঝা ছাড়াই আমদানি করা যায়, এবং তা কম দামে কেনা যায়, তার জন্যেই এই প্রক্রিয়া। তবে আমরা কারও পরিপ্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপই করছি না।’

এদিকে শীঘ্রই আমেরিকা যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিকে শুল্ক ইস্যুতে রণংদেহী মূর্তি ধারণ রেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজই কানাডা, চিন এবং মেক্সিকোর ওপরে শুল্ক চাপানোর নির্দেশিকায় সই রেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাম্প্রতিক সময় ভারতকে আবার ‘শুল্ক রাজা’ বলে অভিহিত করেছিলেন ট্রাম্প। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে ভারতের ওপরেও শুল্কের বোঝা চাপাতে পারে তাঁর প্রশাসন। এই সবের মাঝেই বাজেটে বাইক আমদানির ওপর শুল্ক কিছুটা কমাল কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে মার্কিন হারলে ডেভিডসন বাইকের শুল্ক কমবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ভারতের শুল্ক নীতি নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে সম্প্রতি সিবিএস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা এতটা বোকা দেশ নই যে এত বাজে করব। ভারতের দিকে দেখুন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমার খুব ভালো বন্ধু। তবে তারা কী করে দেখুন। মোটোরসাইকেলের ওপরে ১০০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। আমরা তাদের পণ্যের ওপর কোনও শুল্ক ধার্য করি না। যখন হারলে ভারতে বাইক পাঠায়, তখন সেগুলির ওপরে ১০০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়। আর ভারত যখন এত এত বাইক পাঠায় এখানে, তখন আমরা কোনও শুল্ক ধার্য করি না। আমি তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করে বলেছিলাম, এটা ঠিক হচ্ছে না। আমার একটা ফোনেই হারলের শুল্ক হার ৫০ শতাংশ কাটছাঁট করা হয়েছিল। তবে আমি বলেছিলাম, এটা এখনও গ্রহণযোগ্য নয়। এটা ৫০ শতাংশ বনাম শূন্য। তারা বলে যে এটা নিয়ে তারা কাজ করছে।’ উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত হারলে ডেভিডসনের ওপরে ৫০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছিল। আর এবারের বাজেটে তা আরও কিছুটা কমল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *