শীঘ্রই মার্কিন সফরে যেতে চলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, আমেরিকা ভারতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলেই ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হতেই সকলের আগে একজন বিদেশ রাষ্ট্রনেতা হিসাবে মোদী মার্কিন সফরে যাচ্ছেন।
সোমবার মোদীর এই আসন্ন মার্কিন সফর নিয়ে সম্পূর্ণ অন্য এক ব্যাখ্য়া দিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। মোদীর আসন্ন সফর নিয়ে রীতিমতো ব্যঙ্গের সুরে ভারতের মার্কিন-নির্ভরতা নিয়ে (তথ্যভাণ্ডার ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে) প্রশ্ন তুললেন তিনি।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের এবারের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেই প্রসঙ্গে রাহুলের কটাক্ষ, ভারত সরকার আসলে জয়শঙ্করকে ওই অনুষ্ঠানে পাঠিয়েছিল, যাতে তিনি মোদীর জন্য মার্কিন সফরের নিমন্ত্রণ আদায় করে আনতে পারেন!
রাহুলের এই মন্তব্য শুনেই রে রে করে ওঠে সরকার পক্ষ। সবথেকে বড় কথা, রাহুল যখন এসব বলছেন, সেই সময় মোদী নিজেও অধিবশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। রাহুলের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তাঁর দাবি, কোনও উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়াই রাহুল গান্ধী এই ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য করছেন।রাহুলের বক্তব্যের মাঝেই কিরেন রিজিজু বলে ওঠেন, ‘বিরোধী দলনেতা কখনই এই ধরনের ভিত্তিহীন গুরুতর মন্তব্য করতে পারেন না। এর সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে। তিনি তথ্য যাচাই না করেই এই মন্তব্য করছেন। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীকে করা নিমন্ত্রণ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।’
এই প্রেক্ষিতে লোকসভার অধ্যক্ষও রাহুলকে বলেন, যাতে তিনি তাঁর মন্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করেন। যার পর রাহুল গান্ধীকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার মানসিক শান্তি বিঘ্নিত করার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি…!’
এর পাশাপাশি, এদিনের এই বক্তব্য পেশের সময় রাহুল গান্ধী বেশ কিছু গুরুতর বিষয় তুলে ধরেন। বিশেষ করে চিন ও আমেরিকা সম্পর্কে কথা বলার সময় ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা।
রাহুলের বক্তব্য, অর্থনীতিতে উৎপান ক্ষেত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবং সেই ক্ষেত্রে চিন ভারতের থেকে অন্তত ১০ বছর এগিয়ে রয়েছে। রাহুল বলেন, ‘এখন সকলে এআই নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু, এআই কাজ করে তথ্যভাণ্ডারের উপর ভিত্তি করে। তথ্যভাণ্ডার না থাকলে এআই-এর কোনও কার্যকারিতা নেই।…’
রাহুল আশঙ্কার সুরে বলেন, ‘আজ বিশ্বে যেখানে যত বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম তৈরি হচ্ছে, তার তথ্যভাণ্ডার রয়েছে মূলত চিনের কাছে। এবং যে তথ্যভাণ্ডার গ্রহণ করা হচ্ছে, তার মালিকানা রয়েছে আমেরিকার হাতে। এই ক্ষেত্রে চিন ভারতের থেকে অন্তত ১০ বছর এগিয়ে রয়েছে।…’
এর কিছুক্ষণ পরই রাহুল সেই মন্তব্য করে বসেন, যা শুনেই সরকার পক্ষ ঝাঁঝিয়ে ওঠে। রাহুল গান্ধী বলেন, ‘এই বিপ্লব (তথ্যভাণ্ডার, প্রযুক্তি, এআই ও উৎপাদন সংক্রান্ত)-এর কথা মাথায় রেখেই আমাদের বিদেশ নীতি পরিচালিত হওয়া উচিত। আমরা যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলব, তখন আমাদের বিদেশ মন্ত্রীকে এই কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে পাঠানো উচিত নয়, যাতে তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্য নিমন্ত্রণ আদায় করে আনতে পারেন!’