সরকারি পরিষেবার সঙ্গে ‘সেবাশ্রয়’ প্রকল্পকে এক করা ঠিক নয়। তেমন বড় কোনও বিষয় নয়। দলের একাংশ প্রবীণ নেতার বক্তব্য ‘সেবাশ্রয়’ প্রকল্প নিয়ে এমনই রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কী দেখা যাচ্ছে? একমাসেই স্বাস্থ্য পরিষেবায় নয়া রেকর্ড গড়ে ফেলল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ‘সেবাশ্রয়’ কর্মসূচি। একেবারে বিনামূল্যে চিকিত্সা পরিষেবা থেকে শুরু করে ডায়মন্ডহারবারে এখন জীবনদায়ী ওষধুও পৌঁছে যাচ্ছে মানুষের দুয়ারে। আর পরিসংখ্যান বলছে, এখনও পর্যন্ত উপকৃত হয়েছেন সাড়ে পাঁচ লক্ষ মানুষ। সমালোচকরা যাই বলুন, ২ জানুয়ারি থেকে পথচলা শুরু ‘সেবাশ্রয়’ প্রকল্প ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। একমাসেই প্রায় ৫.৫ লক্ষ মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন। জটিল স্নায়ুরোগের চিকিৎসা থেকে চোখের ছানি বা হার্ট অপারেশনের সুবিধা পেয়েছেন বাসিন্দারা।
এই কাজের মধ্যে দিয়েই দলের ভিতবে এবং দলের বাইরে থাকা বিরোধীদের জবাব দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই ‘সেবাশ্রয়’ প্রকল্পই অনেকের কাছে হয়ে উঠেছে আশার আলো। ৯ বছরের আলতাফের জেআইএমএস হাসপাতালে হার্টের অপারেশন হয়েছে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। অপারেশনের পর আলতাফের পরিবারে যাতে সবরকম সহায়তা পেয়েছে। এমন বহু নজির ঘটেছে ‘সেবাশ্রয়’ প্রকল্পে। তাই তো সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘স্বাস্থ্য পরিষেবা নাগালের বাইরে থাকায় মানুষ নীরবে ভুগে যাবে সেই ধারণা ক্রমাগত ভুল প্রমাণ করছে সেবাশ্রয়।’
এদিকে পরিষেবা পেয়েছেন গাঁটের অসুখে আক্রান্ত কৃতি মান্না, স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত বিবি মোল্লা, কানের অস্ত্রোপচার হয়েছে দু’জনের। হয়েছে ছানি অপারেশনও। বহু মানুষ দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন। রবিবার দিনও মোট ৩৪টি শিবির থেকে ৮,৮৩২ জন মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়েছেন। তাই অভিষেকের বক্তব্য, ‘স্বাস্থ্য পরিষেবা কোনও নীতি নির্ধারণ বা নির্বাচনী সময়ের অপেক্ষায় থেমে থাকতে পারে না। সেবার জন্য সক্রিয়তা, দায়বদ্ধতা এবং দ্রুত সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয়তা আছে। সেই কাজই করছে সেবাশ্রয়।’
অন্যদিকে একমাসে রুটিন চেকআপ–সহ জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীরা সাহায্য পান ‘সেবাশ্রয়’ শিবির থেকে। ৯ বছরের আলতাফের হার্টের অপারেশন হয়েছে, স্নায়ুরোগে আক্রান্ত নেহা মাজির জন্য ১৭ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরুর নিউরোলজিস্টের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তিনি সেবাশ্রয়ের মাধ্যমে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি পাচ্ছেন। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত মামুদা বিবি মোল্লা প্রতি মাসে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত সাথী নস্করের চিকিৎসার জন্য ভেলোরে সিএমসি’তে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্টের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আর অভিষেকের কথায়, ‘এই কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চের মাঝে ১৫–১৬ তারিখ নাগাদ যদি শেষ হয়, আমরা পয়লা বৈশাখের আগে দরকার হলে ৫ হাজার ডাক্তারের কনভেনশন কলকাতার বুকে করব।’