পানামা খাল দখলে নিতে আবারও কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প(Donald Trump)। গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে’ পুনরায় পানামা খালের দখল নেবে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ২০১৭ সালে চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ চুক্তির মেয়াদ নবায়ন না করার ঘোষণা দিয়েছে পানামা।
পানামা খালে মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। রোববারও (২ ফেব্রুয়ারি) পানামা সিটিতে বিক্ষোভে নামেন হাজার হাজার মানুষ। কোনোভাবেই খালটিকে হাতছাড়া করতে নারাজ তারা।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা পানামা খালের ওপর কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ মানবেন না। ট্রাম্প যদি এটি দখল করতে আসে, তাহলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথাও জানান তারা। বলেন, ‘আমরা অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ দেখেছি, এখন আর তা মেনে নেবো না। পানামা খাল আমাদেরই থাকবে।’
এদিকে খালটির নিয়ন্ত্রণ পানামার কাছে হস্তান্তর করা যুক্তরাষ্ট্রের বোকামি ছিল বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার স্থানীয় সময় রাতে গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পানামার বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ চীনের হাতে তুলে দিয়েছে দেশটি। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাই যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় খালের দখল নেবে।
ট্রাম্প আরও বলেন, চীন এখন পানামা খাল চালাচ্ছে—এই খাল চীনের হাতে দেয়া হয়নি, এটি দেয়া হয়েছিল পানামাকে। যদিও সেটি ছিল বোকামি। কিন্তু তারা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। আমরা এটি পুনরায় দখল করবো, নাহলে খুব শক্তিশালী কিছু ঘটতে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন হুমকির মধ্যেই পানামা সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও। স্থানীয় সময় রোববার পানামা খাল পরিদর্শনের পর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রাউল মুলিনোর সঙ্গে। পানামা খালসহ দেশটিতে চীনা প্রভাব কমাতে চাপ দেন রুবিও। জানান, মার্কিন স্বার্থ রক্ষায় যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।
তবে পানামা কোনোভাবেই নিজেদের সার্বভৌমত্ব নিয়ে আপস করবে না উল্লেখ করে মুলিনো বলেন,
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে এই খাল আমাদের, আমরাই এটি পরিচালনা করছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে। সার্বোভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ছাড় নয়।
তবে মার্কিন চাপের মুখে চীনা প্রভাব কমাতে ২০১৭ সালে চীনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ চুক্তির মেয়াদ আর নবায়ন না করার ঘোষণা দিয়েছে পানামা সরকার।
গুরুত্বপূর্ণ এই খালটিকে পানামা সরকারের কাছে হস্তান্তরের উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রয়াত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালে ১৯৭৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে পাস হয় পানামা খাল চুক্তি। পরে ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন পানামা খাল পরিচালনার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে দেশটির সরকারের কাছে হস্তান্তর করেন।