প্রচুর বাংলাদেশি বন্দি রয়েছেন এপার বাংলার জেলে। দিনের পর দিন ধরে, বছরের পর বছর ধরে জেলবন্দি রয়েছেন তারা। নানা কারণে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে তাদের। এদিকে এভাবে বিপুল সংখ্য়ক বাংলাদেশি বন্দি নিয়ে ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে ব্যাখা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট কিছুটা অবাক হয়েছে গোটা বিষয়টি নিয়ে।
কার্যত বাংলায় একদিকে যেমন দলে দলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করেছেন। বাংলার জনসংখ্য়ায় বড় প্রভাব ফেলেছেন তারা। তেমনি বাংলার জেলে বাংলাদেশি বন্দির সংখ্য়া কোনও অংশে কম নয়। কার্যত অনেকের মতে, এই যে বাংলার জেলে গিজ গিজ করে বন্দির সংখ্য়া তার একটা বড় কারণ হল এই বাংলাদেশি বন্দি। তাদের সংখ্যা এতটাই বেশি যে ভিড় সামাল দেওয়া যায় না।
এদিকে ফরেনার্স অ্যাক্টে সাজার মেয়াদ নির্দিষ্ট করা রয়েছে। অর্থাৎ এই সাজার মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। কিন্তু তারপরেও কীভাবে বছরের পর বছর ধরে বাংলার জেলে বাংলাদেশি বন্দিরা রয়েছেন তা নিয়ে কিছুটা অবাক হয়েছে সুপ্রিম কোর্টও।
আদালত জানিয়েছে, ফরেনার্স অ্য়াক্টে সাজা হয়ে যাওয়ার পরে নাগরিকত্ব নির্ণয়ের বিষয়টি অমিমাংসিত বলারও সুযোগ নেই। অন্যদিকে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ২০০৯ সালের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সন্দেহভাজন বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব নিয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে ৩০ দিনের মধ্য়ে।
এখানেই প্রশ্ন নির্দিষ্ট নির্দেশনামা রয়েছে। তারপরেও কীভাবে বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশি নাগরিকরা এই বাংলার জেলে বন্দি থাকতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে এর জবাব এবার শুধু ভারত সরকারকে নয়, এবার রাজ্য় সরকারকেও এর জবাব দিতে হবে। এমনকী সাজার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও যেভাবে জানখালাস উল্লেখ করে পশ্চিমবঙ্গের জেলে বাংলাদেশি বন্দিদের রাখা হয় তা নিয়ে এবার বড় প্রশ্ন উঠল সুপ্রিম কোর্টে।
সুপ্রিম কোর্ট একাধিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেছে। এই বন্দিদের নিয়ে কোন সরকারের কী ধরনের ভূমিকা, এমন ধরনের বন্দির প্রকৃত সংখ্যা কত, কোন সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে এটা নিয়ে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সূত্রের খবর, ২০২৪ সালের ১ লা জানুয়ারি সব মিলিয়ে ২৫০১ জন বিদেশি বন্দি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের জেলে। তার মধ্য়ে ১৪২২জন বিচারাধীন বাংলাদেশি বন্দি ও ৭৭৭জন সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি বন্দি। সাজার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ১৭৯জন বন্দি হিসাবে রয়েছেন।