এই ছবিও দেখতে হল বাংলাকে। নদিয়ার হরিণঘাটার দাসকুলডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো হয়েছে। আর সেই পুজো হল একেবারে পুলিশের পাহারায়। RAF -ও ছিল পাহারায়। এমনকী বিডিও মহর্ষিতা বিশ্বাস নিজে এসে ঘুরে দেখে যান।
এমনকী সোমবারের পরে মঙ্গলবারেও প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়তেও পুলিশ পাহারা ছিল।
মূলত আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির যাতে কোনও অবনতি না হয় সেকারণে এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কার্যত নজিরবিহীন পরিস্থিতি।
পুলিশের কড়া নজরদারি। RAF মোতায়েন। তার মধ্য়েই স্কুলে হচ্ছে সরস্বতী পুজো। তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে অশান্তি কিছু হয়নি। নির্বিঘ্নেই সরস্বতী পুজো হয়েছে। তবে গোটা ঘটনায় কিছুটা বিরক্ত স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছিলেন আমরা ঠিক করে যেতে পারছি না। এটা একেবারেই ভালো লাগছে না।
তবে সূত্রের খবর, এর আগে এই স্কুলে সরস্বতী পুজো হত না। এবারই প্রথম সরস্বতী পুজোর আয়োজন। আর তারপরই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এমনকী প্রধান শিক্ষককে বদলি করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ এমনটাই। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এক্স হ্যান্ডেলে সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন।
এদিকে পুজোর আয়োজন হতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। লাঠিধারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়। স্কুলের ভেতরে পুজো। বাইরে বসে রয়েছে পুলিশ। কার্যত গেট বন্ধ করে পুজো হয়। অভিভাবকরা বাইরে ছিলেন। আর পড়ুয়ারা ভেতরে পুষ্পাঞ্জলি দেয়। প্রসাদও বিতরণ করা হয়। তবে এভাবে এর আগে বাংলায় এভাবে পুলিশ পাহারায় প্রাথমিক স্কুলে সরস্বতী পুজো হয়েছে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকেরই মনে।
এদিকে যোগেশ চন্দ্র কলেজের বাইরেও সরস্বতী পুজোর দিনে ছিল পুলিশের পাহারা।
কলকাতার যোগেশ চন্দ্র ল কলেজে সরস্বতী পুজো করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সাব্বির আলির বিরুদ্ধে। এরপর সেই ঘটনার জল গড়িয়েছিল হাই কোর্ট পর্যন্ত। শেষে পুলিশি নিরাপত্তায় সেই কলেজে সরস্বতী পুজো হয়েছিল। পুজোর দিনে সেখানে গিয়েছিলেন রাজ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি সেখানে পৌঁছতেই উঠেছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান। মন্ত্রীর সামনেই কলেজের এক ছাত্রী কেঁদে ফেলেছিলেন। সেই ঘটনায় তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষের দাবি ছিল, সেই ছাত্রী ‘নাটক করছেন’।পরে এই ইস্যুতে মুখ খুলে অভিযুক্তের গ্রেফতারির পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘এই ঘটনা যদি সত্যি হয়, তাহলে গ্রেফতারের ব্যবস্থা করতে হবে। আজকাল আমি দেখছি এগুলো ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হুমকি দেওয়া ও বলার মনোবৃত্তি আসবে কেন? বাংলার সংস্কৃতিতে আমরা মহিলাদের দেবী রূপে পুজো করি। তাঁদের ব্যাপারে এই সব চিন্তা করাটাও পাপ। এই ধরনের মনোবৃত্তি থাকবে কেন? পুজো নিয়ে রেষারেষি অসভ্যতা। সরস্বতী পুজো মানেই আনন্দ। সেখানে এই ধরনের ঘটনা কেন ঘটবে?’