কুলতলির মইপিঠে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল বাঘ। এক বনকর্মীর ওপর হামলাও করেছিল সেই বাঘ। তবে মানুষের শরীরে দাঁত বসানো সেই বাঘ অবশেষে ধরা পড়ল ভোররাতে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সাড়ে ৩টে নাগাদ সেই বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করা হয়। রাতে একটি ছাগলকে টোপ হিসেবে রেখে বাঘটিকে ধরতে ফাঁদ পেতেছিলেন বনকর্মীরা। ভোররাত সাড়ে ৩টে নাগাদ ফাঁদে পা দেয় বাঘটি। যে খাঁচার ভিতরে ছাগলটিকে রাখা হয়েছিল, তাতে ঢুকে পড়ে বাঘ। বন্ধ হয় খাঁচার দরজা। বনকর্মীদের অনুমান, অত্যন্ত ক্ষুধার্ত হওয়ার জেরেই লোকালয়ে চলে এসেছিল সেই বাঘটি।
এদিকে বাঘটি ধরা পড়ার পরে বন দফতরের ডিএফও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, এই বাঘটি একটি পুরুষ। এই বাঘের বয়স ১০ বছরের আশেপশে হবে। বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করার পরপরই এর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার বন্দোবস্ত করেছে বন দফতর। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বাঘটিকে ফের গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বন দফতরের তরফ থেকে।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি গ্রামবাসীদের সামনেই বনকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল এই বাঘটি। সেদিন আচমকাই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়েছিল বাঘটি। সামনেই ছিল এক গ্রামবাসী। তিনি বাঘ দেখেই গাছে উঠে পড়েন। পরে বাঘের হামলার শিকার হন এক বনকর্মী। ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তিনি। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে।
উল্লেখ্য, মইপিঠে বিগত বেশ কয়েকদিনে একাধিকবার বাঘ দেখা গিয়েছে। আর সম্প্রতি ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ফের বাঘের দেখা মেলে সেখানে। অনেকেই সেই বাঘ দেখেছেন বলে দাবি করেন। পরে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে শুরু হয় বাঘের খোঁজ। পায়ের ছাপ দেখে বাঘের সন্ধান শুরু করেন বনকর্মীরা। তখনই হঠাৎ ঝোপের পাশে ধানক্ষেতে বনকর্মীদের ওপর অর্কিতে হামলা চালায় সেই বাঘটি। ৩ জন বনকর্মীর মধ্যে ১ জনকে কামড়ে ধরে সে। সঙ্গীকে বাঁচাতে বাকি দুই বনকর্মী লাঠি দিয়ে বাঘটিকে পেটানো শুরু করেন। তার জেরে ওই বনকর্মীকে ছেড়ে পালায় বাঘ। এর পর আহত বনকর্মীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, বাঘ যাতে বন থেকে গ্রামে না ঢুকে পড়ে, এর জন্যে বনের সীমানায় নাইলনের নেট দেওয়া থাকে। তবে অনেক সময়ই গ্রামবাসীরা কাঁকড়া ও মাছ ধরতে যাওয়ার জন্যে সেই নাইলনের জাল কেটে ফেলেন। আর এই কারণেই হয়ত মইপিঠে বারবার বাঘের আগমন ঘটছে।