ফ্রান্সে সদ্য সোমবারই পা রেখেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)। এরপর সদ্য, ফরাসীভূমের শহর মার্সেইতে পৌঁছন মোদী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এদিকে, মার্সেই শহরে পা রেখেই নরেন্দ্র মোদী স্মরণ করেছেন বীর সাভারকারকে। ফরাসী এই শহরের সঙ্গে সাভারকরকে ঘিরে এক ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। সেই ‘গ্রেট এসকেপ’ও এদিন মনে করিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী।
মার্সেই পৌঁছে নরেন্দ্র মোদী একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন,’ মার্সেই পৌঁছেছি। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই শহরের একটি আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। এখানেই মহান বীর সাভারকর তাঁর মুক্তির চেষ্টা করেছিলেন। আমি মার্সেইর মানুষ ও সেইসব ফরাসী সমাজসেবীদেরও ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা দাবি করেছিলেন ব্রিটিশ হেফাজতে তাঁকে (সাভারকর) তুলে না দেওয়ার জন্য। ‘
মার্সেইতে এদিন ‘ওয়ার সিমেট্রি’তে শহিদ ভারতীয় সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান মোদী। তবে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সাভারকরের উল্লেখ নিয়ে যায় ইতিহাসের পাতায়। কী ঘটেছিল এই মার্সেই শহরে? যে শহরে নতুন কনস্যুলেট এদিন উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদী ও ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সাভরকরের ঘটনা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন আমলের। যে সময় ভারত জুড়ে ছিল ব্রিটিশ-রাজ।
ইতিহাসের পাতা বলছে, ঘটনা ১৯১০ সালের। সেই বছরের ৮ জুলাই এইচএমএস মোরিয়া জাহাজে লন্ডন থেকে গ্রেফতার হওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর সাভারকরকে ভারতে আনা হচ্ছিল। এদিকে, সাহসী অভিযানে জাহাজের পোর্টহোল দিয়ে জাহাজ থেকে সমুদ্রে ঝাঁপ দেন সাভারকর। পৌঁছন মার্সেই শহরে। তিনি সেখানে ফ্রান্সের প্রশাসনের হাতে ধরা পড়েন। এই ঘটনা ইতিহাসে বহু সময়ই ‘গ্রেট এসকেপ’ হিসাবে বর্ণিত হয়। এরপর চলে দীর্ঘ কূটনৈতিক টানাপোড়েন।
সাভারকরকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মধ্যে দীর্ঘ কূটনৈতিক টানাপোড়েন চলে। সেই সময় যে সমস্ত ফরাসী সমাজকর্মীরা সাভারকরকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেওয়ার বিরোধিতা করেন, তাঁদের এদিনের পোস্টে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও সেবার শেষমেশ, সাভারকরকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেয় ফরাসীরা। পরে সাভরকরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয়। তাঁকে আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দি করা হয়।